প্রকট তারল্য সংকট চলছে দেশের ব্যাংকগুলোতে। সংকট মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার নেওয়া অব্যাহত রেখেছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। গত বুধবার নিলামে ৩৬টি ব্যাংক ও একটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) রেপো ও তারল্য সহায়তা সুবিধার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ১৩ হাজার ৮৫ কোটি টাকা ধার নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বুধবার (১৫ মে) বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক রেপো এবং অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট ফ্যাসিলিটি (এএলএসএফ) এর নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নিলামে এক দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় দুইটি ব্যাংক মোট ৪৯৪ দশমিক ১৫ কোটি টাকার ১৩টি বিড, সাত দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় ১৬টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান মোট ৫ হাজার ৪৩১ দশমিক ২৮ কোটি টাকার ৬৫টি বিড এবং এক দিন মেয়াদি অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট ফ্যাসিলিটির আওতায় ১৮টি পিডি ব্যাংক মোট ৭ হাজার ১৫৯ দশমিক ৯৪ কোটি টাকার ৫৪টি বিড দাখিল করে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও জানায়, অকশন কমিটি কর্তৃক সকল বিডই গৃহীত হয়। ফলে রেপো এবং এএলএসএফ এর আওতায় সর্বমোট ১৩ হাজার ০৮৫ দশমিক ৩৭ কোটি টাকা প্রদান করা হয়। উল্লিখিত এক দিন ও সাত দিন মেয়াদি রেপো এবং অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট ফ্যাসিলিটি এর সুদের হার ছিল যথাক্রমে বার্ষিক শতকরা ৮ দশমিক ৫০, ৮ দশমিক ৬০ ও ৮ দশমিক ৫০ ভাগ।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রা সংকট, সরকারি ট্রেজারি বিলের ক্রমবর্ধমান সুদের হার ও নীতি হার বৃদ্ধির কারণে সামগ্রিক ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। কোনো কোনো ব্যাংক এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা নিয়ে ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগ করছে। কারণ ট্রেজারি বিলের সুদহার ১১ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকিং খাতে তারল্যের সংকটের মধ্যে ব্যাংকগুলো গত কয়েক মাস ধরে প্রতি কার্যদিবসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা পাচ্ছে। এখন ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা কমিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী জুলাই থেকে রেপোর মাধ্যমে তারল্য সহায়তা প্রতিদিনের পরিবর্তে সাপ্তাহিক হবে।