জঙ্গি মৌলবাদী সন্ত্রাসের বিষবৃক্ষ জামায়াত-হেফাজতের রাজনীতি নিষিদ্ধ না হলে বাংলাদেশ থেকে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস নির্মূল করা যাবে না। সোমবার (৩ মে) একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত ‘সব কওমি মাদরাসা সরকারের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ভার্চুয়াল এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি বলেন, শহীদ জননী জাহানারা ইমামের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন আমাদেরকে সবসময় উজ্জীবিত করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের চূড়ান্ত অপব্যবহার করছে স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা একমুখী, বিজ্ঞানভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক শিক্ষাব্যবস্থার চিন্তা দেখতে পাই। কিন্তু সেই শিক্ষাভাবনা নিয়ে আমরা আর এগোতে পারিনি। ৭৫-এ বঙ্গবন্ধু হত্যার পর স্বাধীনতাবিরোধী, একাত্তরের পরাজিত মৌলবাদী গোষ্ঠীর রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণের মাধ্যমে দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক শিক্ষার বিস্তার ঘটে।
আয়োজক কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, জামায়াত-হেফাজতিরা বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের মতো জঙ্গি মৌলবাদী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানানোর জন্য কওমি মাদরাসার নিরীহ ছাত্রদের ব্যবহার করছে। ২৫ হাজারের বেশি কওমি মাদরাসার তিরিশ লাখের বেশি ছাত্র-শিক্ষককে আমরা জামায়াত-হেফাজতের সন্ত্রাসী রাজনৈতিক অভিলাষ পূরণের জন্য তাদের কাছে জিম্মি রাখতে পারি না।
তিনি বলেন, হেফাজতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের পাশাপাশি কওমি মাদরাসায় সরকারের পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশে পৃথক পৃথক আলিয়া-কওমি-নূরানি মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থার কোনো প্রয়োজন নেই। সব মাদরাসায় একই পাঠ্যসূচি প্রচলন করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-চেতনা, জাতির পিতার জীবনী, বাংলাদেশের সংবিধান, বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্য পাঠ, জাতীয় সংগীত গাওয়া এবং জাতীয় পতাকা উত্তোলন সব মাদরাসায় বাধ্যতামূলক করতে হবে।
আলোচনায় আরও যুক্ত ছিলেন নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি শিক্ষাবিদ শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা ও ডাকসুর প্রাক্তন ভিপি অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, নির্মূল কমিটির সহ সভাপতি শিক্ষাবিদ কলাম লেখক মমতাজ লতিফ, নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোট-এর সভাপতি হাফেজ মওলানা জিয়াউল হাসান, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব মাওলানা হাসান রফিক প্রমুখ।