ঋণখেলাপি বর্তমানে দেশে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
তিনি বলেন, ‘দেশের বড় সমস্যা হলো ঋণখেলাপি। এ সমস্যাটি সারা বিশ্বেই রয়েছে। অন্যসব দেশ এ সমস্যার মধ্যেও এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত ঋণখেলাপিদের আইন অনুযায়ী সাজা দিচ্ছে। তবে তারা সাজা দিলেও কোম্পানিগুলোকে বাঁচিয়ে রাখছে। আমাদের দেশে আইন পরিবর্তন করা দরকার, আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।’
শনিবার (২৯ অক্টোবর) ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) আয়োজিত ‘দ্য রোল অব পিপিপি ইন অ্যাচিভিং ভিশন ২০৪১’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সালমান এফ রহমান বলেন, আমাদের এখন পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) প্রজেক্টগুলোতে জোর দিতে হবে। বর্তমানে ৭৬টি পিপিপি প্রজেক্ট হাতে রয়েছে। পিপিপি ছাড়া কোনো উপায় নেই। এ প্রজেক্টগুলোতে আমরা জোর দিচ্ছি। এর মধ্যে একটির কাজ শেষ হয়েছে, জাপানের সঙ্গে আরও তিন-চারটি কাজ চলমান। কোরিয়ার সঙ্গেও তিন-চারটি প্রজেক্টের কাজ চলছে। কাজগুলো শেষ হলে আমরা সুফল পাবো।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তীসময়ে আমরা শূন্য রিজার্ভ দিয়ে শুরু করেছিলাম। ফরেন এক্সচেঞ্জ বলতে কিছুই ছিল না। স্বাধীনতার পর আমরা জি টু জি পদ্ধতিতে পণ্য আমদানি করতাম। এটি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে বেসরকারি খাতে এক্সপোর্ট করার বিষয়টি বলি। বঙ্গবন্ধু আমাদের কথা শুনে বললেন এটি একটি ভালো উদ্যোগ। তবে ৬০ শতাংশ ট্রেডিশনাল পণ্য ও ৪০ শতাংশ নন-ট্রেডিশনাল পণ্য রপ্তানি করতে হবে। পাকিস্তান আমলে আমরা চা রপ্তানি করতে পারিনি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর পরামর্শে চা ও মধুসহ নন-ট্রেডিশনাল পণ্য রপ্তানি করেছিলাম।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের ধারাটি সত্তরের দশকে আমরা শুরু করি। মূলত বঙ্গবন্ধুর আমলে এটা শুরু হয়েছিল। আমাদের বারডেম হাসপাতালে সরকারি ও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ রয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এডিবিতে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের ৭৭ প্রজেক্ট তালিকাভুক্ত হয়েছে। ২০০৯ সালে দেশে সরকারি বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছিল ১৫ শতাংশ ও বেসরকারি বিনিয়োগ ছিল ৮৫ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, দেশে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) এক ধরনের অনাস্থা তৈরি হয়েছে। বেসরকারি বিনোগকারীদের সরকার বিশ্বাস করতে পারে না। অন্যদিকে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরাও সরকারকে বিশ্বাস করতে পারে না। এ অনাস্থা দূর করতে হবে। আমাদের ইমোশনাল সিদ্ধান্ত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।