বগুড়া-৪ ও ৬ আসনের উপ-নির্বাচনে আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিলে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে হিরো আলমের প্রার্থী হতে আর বাধা নেই বলে জানিয়েছে তার আইনজীবীরা।
একই সঙ্গে তার মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) শুনানি শেষে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাজী রেজাউল হাসান ও অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম।
এ বিষয়ে আইনজীবী কাজী রেজাউল হাসান ও ইয়ারুল ইসলাম জানান, মনোনয়নপত্র বাতিলে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রিটার্নিং অফিসারকে বলেছেন আশরাফুল আলমকে প্রতীক বরাদ্দ দিতে, যাতে তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পান। এখন হিরো আলম বৈধ প্রার্থী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থিতা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।
বগুড়া-৪ ও ৬ আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন সামাজিক মাধ্যমের বহুল আলোচিত মুখ হিরো আলম। কিন্তু ভোটার তালিকায় গরমিল থাকায় তার মনোনয়নপত্র প্রথমে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা বাতিল করেন। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিলের পর সেটি খারিজ করা হয়। এরপর তিনি সোমবার (১৬ জানুয়ারি) হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে পৃথক রিট করেন।
এর আগে বগুড়া-৪ ও ৬ আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন হিরো আলম। কিন্তু ভোটার তালিকায় গরমিল থাকায় গত ৮ জানুয়ারি তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।
এরপর মনোনয়নপত্র গ্রহণ করতে হিরো আলম ১০ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে আপিল করেন। সেই আপিলও খারিজ করে দেয় নির্বাচন কমিশন। সবশেষ তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। এরপর সর্বোচ্চ আদালতেই প্রার্থিতা ফিরে পান হিরো আলম।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হিরো আলম বলেন, আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় আমি আমার প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছি। আগামীকাল থেকে নির্বাচনের প্রচারণায় অংশগ্রহণ করবো ইনশাআল্লাহ।
এর আগে মনোনয়নপত্র বাতিলের পর গত ১০ জানুয়ারি হিরো আলম জাগো নিউজকে বলেছিলেন, হিরো আলমরা কখনো হতাশ হয় না। তারা জীবনটা মানুষের জন্য উৎসর্গ করে। মানুষ তাদের অনেক ভালোবাসে। তাদের সঙ্গে সবসময় থাকে।
তখন মনোনয়নপত্র বাতিলের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেছিলেন, হিরো আলমের ১ শতাংশ ভোটার তালিকায় গড়মিল পাওয়া গেছে। সেখানে কয়েকজন ভোটারের সমর্থন না পাওয়ায় মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
এর আগে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও হিরো আলম বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের মনোনয়নপত্র তুলেছিলেন। তখনও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। আপিল করলে নির্বাচন কমিশনেও তা বাতিল হয়। পরে উচ্চ আদালত তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন।
এরপর তৎকালীন বগুড়ার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের হাতে পছন্দের ‘সিংহ’ প্রতীক তুলে দেন। ওই সময় তিনি ৬৩৮ ভোট পান। এতে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। তবে ভোটের মাঝমাঠে গিয়ে অবশ্য তিনি নির্বাচন বর্জন করেন।