প্রস্তাবিত উপাত্ত সুরক্ষা আইন আমাদের সংবিধান গোপনীয়তার যে অধিকার দিয়েছে, সে গোপনীয়তার সুরক্ষা দেবে না। বরং ব্যক্তিগত তথ্য সরকারের মালিকানায় চলে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। সোমবার (৯ মে) ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন, ২০২২ (খসড়া) : পর্যালোচনা ও সুপারিশ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেছে টিআইবি।
সভায় টিআইবি বলেছে, ইন্টারনেটভিত্তিক জীবন ব্যবস্থায় ব্যক্তিগত তথ্যকে ইন্টারনেটের জ্বালানি বা মুদ্রা বলা হয়। এ প্রেক্ষাপটে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার ব্যাপারটির গুরুত্ব উপলব্ধি করে আইন তৈরির উদ্যোগ প্রশংসনীয়। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থার (আঙ্কটাড) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১৯২টি দেশের মধ্যে ১৩৭টি দেশে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা বা তথ্যের গোপনীয়তা সম্পর্কে দেশীয় আইন রয়েছে।
আঙ্কটাডের তথ্যমতে, বাংলাদেশে এ ধরনের আইন নেই। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তাড়াহুড়া করার কোনো সুযোগ নেই। অংশীজনদের নিয়ে ব্যাপকভিত্তিক আলোচনার পরই আইনটি চূড়ান্ত করা উচিত বলে মনে করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। আইনটি এভাবে পাস হলে তা একটি কালো আইনে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করে ইফতেখারুজ্জামান প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর ধারাগুলো চিহ্নিত করেন।
টিআইবির এ পরিচালক বলেন, ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা দেওয়ার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। আইনটি পাশ হলে সাধারণ মানুষের মতপ্রকাশের অধিকার খর্ব হবে। এটি সংবিধানের সঙ্গেও সাংঘর্ষিক তাই এই আইনের খসড়াটি ঢেলে সাজানো উচিত। সংবাদ সম্মেলনে ইউনিভার্সিটি অব মালয়া এর মালয়েশিয়ার ল’ অ্যান্ড ইমাজিং টেকনোলজিসের শিক্ষক এরশাদুল করিম বলেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, উত্তর আমেরিকা ও আফ্রিকার দেশগুলোয় ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় আইন রয়েছে। এসব আইনে ব্যক্তিগত তথ্য কী, তার ব্যাখ্যা আছে, কিছু সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যও আছে। কিন্তু বাংলাদেশে প্রস্তাবিত এ আইনের খসড়ায় ব্যক্তিগত তথ্য কী, তারই কোনো ব্যাখ্যা নেই। অতিমাত্রায় বিধি নির্ভরতা, অস্পষ্ট ও অসম্পূর্ণ প্রস্তাবনা এবং ব্যক্তি শব্দের সঠিক ব্যবহার ও অপব্যবহারের পথ করে দেবে বলে মন্তব্য করেছে টিআইবি।