দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং উদ্ভাবন-নির্ভর সমাজ বিনির্মাণে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবননির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করা সরকারের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসারের ফলে কোটি কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানান মন্ত্রী।
রোববার (৭ মে) ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের আমন্ত্রণে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে যোগ গিয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’ রূপকল্পের কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশে প্রতিটি নাগরিক প্রযুক্তির ব্যবহারে দক্ষ হবে, প্রযুক্তির মাধ্যমে সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সাধিত হবে, সরকার প্রযুক্তিগতভাবে স্মার্ট হবে এবং সমাজের সব স্তরে এর প্রতিফলন হবে। তিনি প্রযুক্তি ও উদ্ভাবননির্ভর শিক্ষাব্যবস্থাকে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রণয়নের অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে অভিহিত করে, শিক্ষাব্যবস্থার সর্বস্তরে প্রযুক্তির প্রসারে সরকার প্রণীত পদক্ষেপের ওপর আলোকপাত করেন।
তিনি ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল বৈষম্য সৃষ্টির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাব্যবস্থার আমূল সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে মর্মে মন্তব্য করে শিক্ষা, প্রযুক্তি ও কর্মসংস্থান- এই তিনটির মধ্যে নিবিড় সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি শিক্ষাজীবনে অর্জিত জ্ঞান যাতে কর্মক্ষেত্রে অনুপযোগী হয়ে না যায়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষণ ও দক্ষতার উত্তরোত্তর উন্নয়নের জন্য বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার সুস্পষ্ট রূপরেখা সৃষ্টির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকালে শিক্ষামন্ত্রী ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী চেয়ারপারসন প্রফেসর ক্লাউস শোয়্যাব এবং ফোরামের বর্তমান সভাপতি বর্গ ব্রেন্ডের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। এসময় তিনি অর্থনৈতিক উন্নয়নের বৈশ্বিক আলোচনা এবং এতদসংশ্লিষ্ট বৈচিত্র্যময় চিন্তাভাবনাকে একটি কমন প্লাটফর্মে উপস্থাপনের প্রয়াসের জন্য তাদের প্রশংসা করেন। শিক্ষামন্ত্রী বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে অর্জিত অগ্রগতি নিরবচ্ছিন্ন রাখতে কোভিড-১৯ এর কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং সময়ে সরকার কর্তৃক গৃহীত প্রচেষ্টা তাদের সামনে তুলে ধরেন। নানাবিধ ইতিবাচক দিকের পাশাপাশি, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ শ্রমবাজারের ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে, সে বিষয়ে নিবিড় ও বিস্তারিত গবেষণা কার্যক্রম হাতে নেওয়ার জন্য তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামকে অনুরোধ জানান।
বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীবৃন্দ, প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদবৃন্দ, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ, বিশ্বের নামকরা করপোরেট সংস্থাসমূহের প্রধান নির্বাহীরা ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম আয়োজিত এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।