উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের কারণে কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা আগের থেকে অনেকটাই বেড়েছে। এর মধ্যে নতুন যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে, তা হলো- পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে পারে উত্তর কোরিয়া। বিষয়টি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র।
তারা পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা আটকাতে চায়। আর সেই কাজটি রাশিয়া ও চীন করতে পারে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স শুক্রবার তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা আটকাতে পারে রাশিয়া-চীন। তাদের সেই ক্ষমতা আছে।
সর্বশেষ ২০১৭ সালে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালায় কিম জং উনের দেশ।
নাম গোপন রাখার শর্তে যুক্তরাষ্ট্রের ওই কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, যদিও যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরের মে মাস থেকে বলে আসছে— ২০১৭ সালের পর উত্তর কোরিয়া আবারও পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে যাচ্ছে, তবে ওয়াশিংটন এখনও নিশ্চিত নয় ঠিক কখন এ ধরনের পরীক্ষা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস উত্তর কোরিয়া পরমাণু পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছে। আমাদের বিশ্বাস তারা এটি করতে পারে। তবে তারা আজ এটি করবে কিনা তা আমরা বলতে পারব না কারণ আমাদের ভেতরের তথ্য জানা নেই।
এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা ঠেকাতে এগিয়ে আসবে চীন ও রাশিয়া।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি অন্যান্য অঞ্চলের দেশগুলো — বিশেষ করে রাশিয়া ও চীন — সম্ভাব্য পরমাণু পরীক্ষার বিষয়টি কিভাবে নেবে সে হিসাব কষছে পিয়ংইয়ং। আমি বিশ্বাস করি উত্তর কোরিয়াকে আটকাতে পারে রাশিয়া-চীন। তাদের সেই প্রভাব আছে। আমরা চাই তারা এগিয়ে আসুক। চীন-রাশিয়াও উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কার্যক্রমের বিরোধী।
এদিকে বৃহস্পতিবার জাপান উপকূলে উত্তর কোরিয়া আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক ডাকা হয়েছে। এ বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কার্যক্রেমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে যেন পিয়ংইয়ং পরমাণু অস্ত্র তৈরি না করতে পারে। তবে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করার পর নিরাপত্তা পরিষদে যে বিরোধের সূত্রপাত হয়েছে তাতে উত্তর কোরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা কিভাবে কার্যকর করা হবে সেটি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলন এবং নিজ দেশে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ায় পিয়ংইয়ং পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালাচ্ছে না।
এদিকে কোরীয় উপদ্বীপে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ সামরিক মহড়া চালানোয় দুই দেশের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তেজনা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিম জং উনের সম্ভাব্য পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার শঙ্কাও বেড়েছে।