২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের একাদশের সব বইয়ের দাম বাড়ছে। এসব বইয়ের দাম ১৫ থেকে ২৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) অনুমোদিত বাংলা, ইংরেজি, আইসিটি ও বাংলা সহপাঠ বইয়ের পাণ্ডুলিপি চূড়ান্ত করেছে। ১৫ জানুয়ারির পর থেকে প্রেসগুলো বই ছাপার কাজ শুরু করবে। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে একাদশের ক্লাস শুরু হবে।
এ বিষয়ে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, ‘উচ্চ মাধ্যমিকের বই তৈরিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগামী ১৮ জানুয়ারির মধ্যে দরপত্র চূড়ান্ত করা হবে। এ বছর বইয়ে তেমন পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। এনসিটিবি উচ্চ মাধ্যমিকের ৪টি বইয়ের দাম ও পাণ্ডুলিপি চূড়ান্ত করে দেবে। বাকিগুলো বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে ছাপানো হবে। এসব বই কেউ কেউ নকল করার চেষ্টা করে থাকে। সেটি বন্ধে আমরা সর্তকর্তা অবলম্বন করে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘এবছর কাগজের মূল্য বৃদ্ধির কারণে একাদশের বইয়ের দাম কিছুটা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রকাশকরা এটি ৫০ শতাংশ বাড়ানো দাবি জানালেও সেটি আমলে নেওয়া হয়নি। বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে এসব বইয়ের দাম বাড়ানো হবে। অভিভাবকদের ওপর যাতে চাপ তৈরি না হয় সেটি বিবেচনা করে মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া।’
তবে এনসিটিবি’র একটি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের একাদশের বইয়ের দাম ১৫ শতাংশ বাড়ানো হতে পারে। তবে প্রকাশকরা ন্যূনতম ৩০ শতাংশ বাড়ানো দাবি জানাচ্ছে। এজন্য তাদের পক্ষ থেকে প্রতিযোগিতা কমিশনে বাজার বিবেচনা করে দাম বাড়ানো জন্য দাবি জানিয়ে আবেদন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির (বাপুস) সহ-সভাপতি শ্যামল পাল শনিবার বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী কাগজের দাম বেড়ে গেছে। সেটি বিবেচনা করে এনসিটিবিকে একাদশের বইয়ের বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। তবে এনসিটিবি থেকে দেওয়া একাদশের বাংলা, ইংরেজি, আইসিটি ও বাংলা সহায়ক বইয়ের দাম আমরা চাইলেও বাড়াতে পারি না। এনসিটিবি যে মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হবে, সেটিই আমাদের নির্ধারণ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘উচ্চ মাধ্যমিকের অন্যান্য বইয়ের দাম ২৭ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত বছরের বই চলতি বছরের বর্ধিত দামে দোকানো বিক্রি করা হবে। প্রেস মালিক ও বিক্রেতাদের নিয়ে সভা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এবার ইংরেজি বইয়ে ছয়টি অধ্যায়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে। বইয়ের দাম আগের মতো রাখা হয়েছে। কেউ যাতে নকল বই ছাপাতে না পারে, সেজন্য আমাদের একটি মনিটরিং টিম মাঠে কাজ করবে। বইয়ের মান আগের চাইতে আরও ভালো করা হচ্ছে। ২ মার্চ শিক্ষামন্ত্রী এসব বইয়ের মোড়ক উন্মচন করবেন।’
জানা গেছে, এবার এনসিটিবি উচ্চ মাধ্যমিকের চারটি বিষয়ের মোট ৪৫ লাখ বই ছাপানোর অনুমোদন দেবে। সে হিসাবে প্রতিটি বই ১০ লাখের কিছুটা বেশি ছাপানো হবে। এ বাবদ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা আয় হবে প্রতিষ্ঠানটির। এ অর্থ সরকারের রাজস্বখাতে জমা দেওয়া হবে।