তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেছেন তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তরুণরা স্বাবলম্বী হতে পারে। তারা নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলে অন্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। শনিবার (২১ মে) দুপুরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে পাঁচ শতাধিক তরুণ-যুবদের সমাগমে অনুষ্ঠিত সাব ন্যাশনাল ইয়ুথ সামিটের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।
সচিব বলেন, উগ্রপন্থা থেকে যুব সমাজকে সুরক্ষায় তথ্য প্রযুক্তি একটা বড় হাতিয়ার হতে পারে। সরকার তথ্য প্রযুক্তি খাতকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে যুবদের তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞানসমৃদ্ধ করার জন্য প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে কাজ করা হচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তিকে ইতিবাচক ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারে এ জন্য যুবদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আর এ জন্য সরকারের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি এবং সামাজিক সংগঠনকে ভূমিকা পালন করতে হবে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তর আয়োজিত এই সম্মেরনে সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার, ইউএনডিপির প্রকল্প পরিচালক রবার্ট স্টয়েলম্যান, নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. জহিরুদ্দিন, সরকারি বিএল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শরীফ আতিকুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম খোকন ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শ্রাবন্তী চক্রবর্তী, কেসিসির ৩০ নম্বর ওয়ার্ড পিস ক্লাবের ইফতেখার মাহবুব লাবিব, ৫ নং ওয়ার্ড পিস ক্লাবের তাইয়্যেবা ইসলাম এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিফাত-উল-ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন রূপান্তরের অপর নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার গুহ।
সভাপতির বক্তৃতায় খুবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন আয়োজক প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন সব অন্যায়, অসত্য, কুসংস্কারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের যুবরা অতীতে যেমন রুখে দাঁড়িয়েছে, এখনও তার সেটা করবে। এজন্য প্রয়োজন তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা। বর্তমান সরকার যুবকদের যোগ্যতম নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি হাব তৈরি করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ থেকে আগামী দিনের নাগরিকরা সৃষ্টিশীলতার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হবেন।
অনুষ্ঠানে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অমানিশার প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়। পরে ডিজিট্যাল যুব নাগরিক বিষয়ে এক প্যানেল আলোচনা ইউএনআরসিওর পিভিই সমন্বয়কারী নাদিম ফরহাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় অংশ নেন শেখ ইফতেশাম ইসলাম, রুসলান আবিদ, শেখ নাঈমা সুলতানা ও অরিশা আরজু।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, খুবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন এবং রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম খোকন। এই সাব ন্যাশনাল ইয়ুথ সম্মেলনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ-ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়, নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা মহানগর ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের ৫ শতাধিক তরুণ-যুব যোগ দেন।
শান্তি-সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী যুবদের এই সম্মেলনে তাদের গৃহীত নানা উদ্যোগের বিষয়গুলি প্রদর্শনের জন্য স্টল ছিল। তিনটি সেরা স্টলকে পুরষ্কৃত করা হয়। ছিল প্যানেল আলোচনা, অভিজ্ঞতা বর্ণনা, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচিত্র প্রদর্শনী, মিডিয়া ব্রিফিং। বিকেলে সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে ছিল রূপান্তর থিয়েটারের পরিবেশনায় পটগান, স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং তারকা শিল্পী অবন্তী সিঁথি ও মিনার রহমানের গান।