আসন্ন ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি কমাতে বিভিন্ন সড়কে চলমান সংস্কার ও নির্মাণকাজ ঈদের আগে ও পরে ১৪ দিন বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। রোববার সংগঠনটির পরিবহন ও যোগাযোগ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম বৈঠকে এ দাবি জানান এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় মোস্তফা আজাদ বলেন, বিভিন্ন সড়কে সংস্কার ও নির্মাণকাজ চলায় যানবাহনের গতি ধীর হয়ে যাচ্ছে, যা দীর্ঘ যানজট তৈরি করছে।
ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি কমাতে তাই ২৭শে এপ্রিল থেকে ১০ই মে পর্যন্ত সব ধরনের সংস্কার ও নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে হবে। বৈঠকে তিনি আরও জানান, যেসব পয়েন্টে বেশি যানজট হয়, এ সময় সেসব স্থানে সার্বক্ষণিক হাইওয়ে পুলিশ মোতায়েন করতে হবে। এ ছাড়া সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারি সংস্থাগুলোকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান তিনি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে শিগগিরই চিঠি পাঠানো হবে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষদের ঈদযাত্রায় ভোগান্তি কমাতে মাওয়া ও আরিচা ঘাটে বাড়তি ফেরি ও ফেরির ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোর আহ্বান জানান মোস্তফা আজাদ চৌধুরী। এ সময় তিনি পদ্মা সেতুর টোল নির্ধারণে এফবিসিসিআই, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও বাস ট্রাক মালিক সমিতিকে সম্পৃক্ত করার দাবি জানান। এর আগে এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি ও কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ মো. আমিনুল হক শামীম যানজটে আর্থিক ক্ষতির প্রসঙ্গ তুলে জানান, শুধু টঙ্গীর যানজটেই যানবাহনের জ্বালানি খরচসহ দৈনিক ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।
করোনায় ১৮ মাস গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও সরকারের কাছ থেকে কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, খেলাপি এড়াতে, আয় না থাকলেও ব্যাংক ঋণের কিস্তি নিয়মিত পরিশোধ করতে হচ্ছে তাদের। এমন পরিস্থিতিতে আগামী বাজেটে টায়ার, টিউব ও অন্যান্য যন্ত্রাংশের ওপর বাড়তি শুল্ককর আরোপ না করার আহ্বান জানান তিনি। কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ বাস ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, রাজধানীর জয়কালি মন্দির ও ইত্তেফাক মোড়ে প্রতি রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চাঁদা তোলেন। চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সহায়তা চান তিনি।
করোনাকালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাত হিসেবে গণপরিবহন খাতকে চিহ্নিত করে রমেশ চন্দ্র ঘোষ আগামী তিন বছর এ খাতে নীতি সুরক্ষা দেয়ার আহ্বান জানান। আগামী বাজেটে বাড়তি কর আরোপ না করার আহ্বান জানান তিনি। কমিটির অন্য সদস্যরা জানান, ভাঙাচোরা সড়কের কারণে যানবাহনের স্থায়িত্ব কমে যাচ্ছে। যানজট কমাতে এবং সড়কে শৃঙ্খলা আনতে সমন্বিত পরিবহন ব্যবস্থাপনা, সেবার বিকেন্দ্রীকরণ, বিআরটিএকে কার্যকর করা এবং ফিটনেস সনদের নামে ঘুষ ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানান তারা। অন্যদের মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র পরিচালক বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, সাবেক পরিচালক আব্দুল হক, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম, এম হুমায়ুন কবীর, ফারুক তালুকদার সোহেল, প্রকৌশলী গোলাম কবীর, জি রহমান শহীদ ও বজলুর রহমান রতন।