ঈদুল আজহার পর চিনির দাম আরেক দফা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বাড়ায় আমদানিতে খরচ বাড়ছে। এ কারণে ঈদের পর চিনির দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
কয়েক মাস ধরেই বাড়তি দামে চিনি বিক্রি হয়ে আসছে বাজারে। কিন্তু মিলমালিকেরা চান দাম আরও বাড়াতে। তাদের যুক্তি, বিশ্ববাজারে চিনির দাম বাড়তি। এজন্য দেশের বাজারে দাম সমন্বয় করতে চান তারা। তবে সব ধরনের খরচ ও মুনাফাসহ সরকার চিনির যে দামের হিসাব দিচ্ছিল, তা কিছুতেই মানছিলেন না মিল মালিকেরা। এমন পরিস্থিতিতে গত সোমবার হঠাৎ করেই চিনিকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ২২ জুন বৃহস্পতিবার থেকে তারা প্রতি কেজি প্যাকেটজাত চিনি ১৫০ টাকা ও খোলা চিনি ১৪০ টাকা দরে বিক্রি করবে। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে (বিটিটিসি) নতুন এ দরের কথা জানিয়ে ওইদিন চিঠিও দেয় চিনিকল মালিকদের সংগঠনটি।
ওই চিঠির পর গত মঙ্গলবার সমিতির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে বিটিটিসি। বৈঠকে চিনির দাম ঈদের আগে না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। ঈদের পরে বিটিটিসির সঙ্গে এ নিয়ে মিলমালিকদের আবার বৈঠক হবে। তখন দাম সমন্বয় হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।
এমন পরিস্থিতিতে আজ চিনির দাম বাড়ানোর বিষয় নিয়ে কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। টিপু মুনশি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়েই চলেছে। আমাদের দেশের ৯৯ ভাগ চিনিই আমদানিনির্ভর। ট্যারিফ কমিশনের হিসাবমতে বিশ্ববাজারে চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় পণ্যটি আমদানিতে আমাদের খরচ বেশি হচ্ছে। ঈদের আগে দাম বৃদ্ধি বা কমানো নিয়ে আর বসার সুযোগ নেই। যেহেতু চিনি আমদানিতে কিছুটা খরচ বাড়ছে সেহেতু ঈদের পর চিনির দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
ঈদের আগে বেশি দামে চিনি বিক্রি করলে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখনই চিনির দাম বাড়াতে চাই না। ভোক্তা অধিকারকে বলব তারা বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে দেখবে। কেউ ঈদের আগে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আয়ুর্বেদ খাতে সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে টিপু মুনশি বলেন, ছোটবেলায় মা বলতেন-কালোজিরা বেটে ভাতের সঙ্গে খেতে। এতে শরীর ভালো থাকে। হাজার হাজার বছর ধরে লতাপাতা দিয়ে আমাদের পূর্ব পুরুষেরা সুস্থ থেকেছেন। আমাদের হাজার বছরের চিকিৎসা ইতিহাসে আয়ুর্বেদের নিবিড় সম্পৃক্ততা রয়েছে। এ খাতে সামনে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। অ্যান্টিবায়োটিক খেতে খেতে এক সময় আমাদের শরীর অকেজো হয়ে পড়বে। এর বিপরীতে প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতিই বেশি উপকারী। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও আয়ুর্বেদ পণ্য ব্যবহার করেন।
টিপু মুনশি বলেন, আয়ুর্বেদ নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা করার প্রয়োজন আছে। আমরা প্রচারে অনেক পিছিয়ে আছি। মানুষজন যেন এটা ব্যবহার করতে শুরু করে। এটা নিয়ে গবেষণা করারও প্রয়োজন রয়েছে। এতে আমাদের অ্যান্টিবায়োটিক নির্ভরতা কমবে। দেশের ফরেন কারেন্সিতে একটা পরিবর্তন আসবে।