ঈদের আগে মানুষ রাজধানীসহ বিভিন্ন কর্মস্থল থেকে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরবে—এটাই স্বাভাবিক। তবে বাড়ি গেলে এবার আটকা পড়তে হবে তাদের। কারণ সামনে কঠোর বিধি-নিষেধ। আর তা শুরু হবে ঈদের মাত্র একদিনের বিরতি দিয়েই। ওই সময় থেকেই আবারও বন্ধ হয়ে যাবে সব গণপরিবহন ও যান চলাচল।
চলমান কঠোর বিধি-নিষেধ শিথিল করায় ১৫ জুলাই থেকে চলবে গণপরিবহন। আর ঈদ আগামী ২১ জুলাই। ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকেই শুরু হবে কঠোর বিধি-নিষেধ। তাতে চলমান বিধি-নিষেধের মতো কঠোরতা থাকবে।
১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে আগামী ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। একই প্রজ্ঞাপনে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন, জনসাধারণের যাতায়াত, ঈদ পূর্ববর্তী ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা, দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত আরোপিত সকল বিধি-নিষেধ শিথিল করা হলো। তবে এ সময়ে সর্বাবস্থায় জনসাধারণকে সতর্ক অবস্থায় থাকা এবং মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।
এরআগে গত ১ জুলাই থেকে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করে সরকার। ১৪ জুলাই কঠোর বিধি-নিষেধের দুই সপ্তাহ শেষ হচ্ছে। এই সময়ে সরকারি-বেসরকারি অফিস, গণপরিবহণ এবং শপিংমল বন্ধ রাখা হয়।
নতুন প্রজ্ঞাপনে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিসসমূহ বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি সড়ক, রেল ও নৌ-পথে গণপরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) ও সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফলে, কেউ বাড়ি গেলেও ঈদের দিন বা ঈদের পরদিন ২২ জুলাই কর্মস্থলের উদ্দেশে ঢাকায় ছুটতে হবে। তবে সড়কের যানজটে পড়লে আটকে পড়তে হতে পারে। কারণ, ২৩ জুলাই ভোর ৬টা থেকেই কঠোর বিধি-নিষেধ!
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সংকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিধি-নিষেধ বাস্তবায়নে ২৩ জুলাই থেকে আবারও মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী, বিজিবি/কোস্টগার্ড, পুলিশ, র্যাব ও আনসার।
এ নিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠ পর্যায়ে কার্যকর টহল নিশ্চিত করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয় সেনা কমান্ডারের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করে সেনাবাহিনী, বিজিবি/কোস্টগার্ড, পুলিশ, র্যাব ও আনসার নিয়োগ ও টহলের অধিক্ষেত্র, পদ্ধতি সময় নির্ধারণ করবেন। সে সঙ্গে স্থানীয়ভাবে বিশেষ কোনো কার্যক্রমের প্রয়োজন হলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিবেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহ এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।