তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলের জনপ্রিয় স্থান ইস্তিকলাল অ্যাভিনিউয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা ৮১। এ ঘটনায় এক ‘সিরিয়ান নাগরিক’সহ ৪৬ জনকে গ্রেফতার করেছে তুর্কি পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই নারী আহলাম আল-বশির নামে পরিচিত। আল আরাবিয়ার খবরে বলা হয়েছে, তুর্কি পুলিশ সোমবার (১৪ নভেম্বর) গ্রেফতার আহলামের ব্যাপারে গণমাধ্যমে জানায়। শুধু বলা হয়েছে তিনি সিরিয়ার নাগরিক। ইস্তিকলাল অ্যাভিনিউয়ে তিনিই বোমা পুঁতেছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তুর্কি সম্প্রচারমাধ্যম এনটিভি পুলিশকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, আহলাম আল-বশির আঙ্কারা ও তার পশ্চিমা মিত্রদের দ্বারা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসাবে তালিকাভুক্ত কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) কাছ থেকে এ ঘটনার জন্য আদেশ পেয়েছিলেন। তিনি মূলত কুর্দি বন্দুকধারীদের জন্য কাজ করতেন। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আহলামকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সোয়লু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সুলেমান সোয়লু এ ব্যাপারে বলেন, আমরা ধারণা করছি মারাত্মক এ সন্ত্রাসী হামলার আদেশ উত্তর সিরিয়ার আইন আল-আরব (কোবান) থেকে এসেছে। সেখানে পিকেকের সিরিয়ার সদর দপ্তর রয়েছে। যারা এই জঘন্য সন্ত্রাসী হামলার জন্য দায়ী, আমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেব।
হামলার ঘটনায় আইএসআইএলের (আইএসআইএস) সংযোগের সন্দেহ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। কারণ, বিস্ফোরণের দায় এখনও কোনো গোষ্ঠী স্বীকার করেনি। রোববার (১৪ নভেম্বর) তুরস্কের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে ইস্তিকলাল অ্যাভিনিউয়ে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করে ইস্তাম্বুলের গভর্নর আলি ইয়ারলিকায়া টুইটারে একটি পোস্ট দেন। প্রথমে অবশ্য হতাহতের বিষয়টি তিনি জানাতে পারেননি।
পরে জানা যায়, বিস্ফোরণের ঘটনায় ওই এলাকায় ৮ জন নিহত ও ৮১ জন আহত হন। এ ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। রোববার ইন্দোনেশিয়ায় গ্রুপ অব ২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্য দেশ ছাড়ার আগে তিনি বলেন, এটি ছিল বিশ্বাসঘাতক হামলা। অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া হবে।
হামলার ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে ইস্তাম্বুল প্রশাসন। ইস্তিকলাল অ্যাভিনিউয়ে পর্যটক ও স্থানীয়দের কাছে জনপ্রিয় স্থান। সেখানে প্রচুর দোকান ও রেস্তোরাঁ রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৫ এবং ২০১৭ সালে আইএস ও নিষিদ্ধ ঘোষিত কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে যুক্ত গোষ্ঠীগুলো দ্বারা তুরস্ক মারাত্মক বোমা হামলার শিকার হয়েছিল।