রাজধানী তেহরানে শনিবার ইরানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের এক সমাবেশে তিনি এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, কোনো কোনো লেখক ইতিহাস লিখতে গিয়ে যখন এ কথা বলেন যে ইরান ও মার্কিন সরকারের বিরোধ শুরু হয়েছে ১৯৭৯ সালের চার নভেম্বর বা ফার্সি ১৩৫৮ সনের ১৩ অবন তারিখ থেকে!- তাদের এই বক্তব্য বিভ্রান্তিকর। মার্কিন সরকারের নেতৃবৃন্দ ইরানের ইসলামী বিপ্লবের প্রথম থেকে ও এ বিপ্লবের আগে থেকেই ইরানি জাতির সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে এবং তারা যতটা সম্ভব ইরানি জাতির বিরুদ্ধে সব শক্তি ব্যবহারের চেষ্টা করেছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা মার্কিন আধিপত্য মোকাবেলায় ইরানি জাতির বিগত প্রায় ৭০ বছরের জুলুম-বিরোধী সংগ্রামের ইসলামী, জাতীয়, বুদ্ধিবৃত্তিক ও প্রজ্ঞাপূর্ণ দিকের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই সংগ্রাম মানবিক ও আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং যৌক্তিকতা, নৈতিকতা ও ধর্ম আর ইসলামী আইনসিদ্ধ এই সংগ্রাম সঠিক রোড-ম্যাপ অনুযায়ী ইরানি কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে অব্যাহত থাকবে।
আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, ইসরায়েল ও মার্কিন সরকার ইরানি জাতির বিরোধী প্রত্যেক পদক্ষেপের দাঁতভাঙা জবাব পাবে সুনিশ্চিতভাবে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ইহুদিবাদী ইসরায়েলের প্রতি স্বৈরাচারী শাহের সহায়তাগুলোর ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, পাহলভি সরকার মার্কিন সরকারের ইশারায় জ্বালানি সহায়তা দেওয়াসহ নানা ধরনের মদদ যুগিয়ে দখলদার ইসরায়েলকে শক্তিশালী করতে ভূমিকা রেখেছিল, যা ছিল অবিস্মরণীয় বিশ্বাসঘাতকতা এবং তা এমন সময় করেছিল যখন এ অঞ্চলের সব সরকার ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল।
আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, দুঃখজনকভাবে বর্তমানেও এ অঞ্চলের অনেক সরকার গাজা ও লেবাননে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর ব্যাপক বিপর্যয় সৃষ্টিকারী অপরাধগুলোকে উপেক্ষা করে এই রক্ত-পিপাসু শত্রুকে অর্থনৈতিক ও এমনকি সামরিক সাহায্যও দিয়ে যাচ্ছে!
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিশালী ও উন্নত দেশের মোকাবেলায় প্রতিরোধের সাফল্য সম্পর্কে সন্দেহ পোষণকারীদের ধারণাকে ভুল হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ইরান গত ৪৬ বছরে মার্কিন বিরোধী সংগ্রামে অবশ্যই সফল হয়েছে এবং এর একটি প্রমাণ হলো এখন ইরান মার্কিন শক্তিকে দুর্বল করতে সক্ষম হয়েছে। শিগগিরই ইসরায়েলকে সম্প্রতি তেহরানে হামলার পাল্টা জবাব দেওয়া হবে বলেও সমাবেশে হুঁশিয়ারি দেন খামেনি।