পূর্ব জেরুজালেমে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র আল-আকসা মসজিদে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী। শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) ভোরে ইসরায়েলি পুলিশের হামলা ও এর জেরে সৃষ্ট সহিংসতায় কমপক্ষে ৬৭ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
ইসলাম ধর্মের পবিত্র এই স্থাপনাটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কমিটি জানিয়েছে, শুক্রবার ভোর হওয়ার আগেই ইসরায়েলি পুলিশ জোর করে আল-আকসা মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে। সেসময় ফজর নামাজে অংশ নেওয়ার জন্য হাজার হাজার মুসল্লি মসজিদে উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইনে প্রচারিত ভিডিওগুলোতে ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশে ইসরায়েলি পুলিশকে টিয়ার গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে দেখা যাচ্ছে। জবাবে পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে দেখা যায় ফিলিস্তিনিদের। এছাড়াও কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়া থেকে বাঁচতে উপস্থিত অন্য মুসল্লিদের মসজিদের ভেতরে নিজেদেরকে আশ্রয় নিতে দেখা যায়।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্টের জরুরি সেবা জানিয়েছে, তারা কমপক্ষে ৬৭ জন আহত ফিলিস্তিনিকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। অন্যদিকে মসজিদ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা এনডাউমেন্ট কমিটি জানিয়েছে, মসজিদের একজন প্রহরীর চোখে রাবার বুলেট দিয়ে গুলি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যমগুলো বলেছে, মসজিদ কম্পাউন্ডের ভেতরে আহত বহু সংখ্যক মুসল্লি আটকা পড়েছেন। তবে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, অ্যাম্বুলেন্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মসজিদে প্রবেশে বাধা দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েলি পুলিশের দাবি, সকালের (ফজর) নামাজ শেষ হওয়ার পরও বহু মানুষ ভেতরে অবস্থান করছিল এবং ‘সহিংস’ ব্যক্তিদের সরিয়ে দিতেই ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান এবং ইহুদিদের টেম্পল মাউন্ট হিসেবে পরিচিত এই স্থাপনায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা প্রবেশ করে।
তাদের দাবি, ফিলিস্তিনিদের একটি দল আল-আকসার পশ্চিম প্রাচীরের পার্শ্ববর্তী একটি ইহুদি প্রার্থনা স্থানের দিকে ঢিল ছুড়তে শুরু করার পর তাদেরকে ‘ছত্রভঙ্গ করতে এবং পেছনে ঠেলে দিতে’ মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে পুলিশ।
ইসলামের ইতিহাসে আল-আকসা মসজিদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ধর্মীয়ভাবে মুসলিমদের কাছে এটি তৃতীয় পবিত্র স্থান। অন্যদিকে এই স্থাপনাটি ইহুদিদের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ স্থান। তাদের কাছে আল-আকসা মসজিদটি টেম্পল মাউন্ট হিসেবে পরিচিত।