বরগুনা সদর মাছ বাজারে প্রতি কেজি ইলিশ মাত্র ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। জেলার সব বাজারে চাহিদা অনুযায়ী মাছ থাকলেও ক্রেতা সঙ্কটে দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার ( ৮ মার্চ ) রাতে জেলার বিভিন্ন বাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিক্রেতা যৌথভাবে মাছের ডালা সাজিয়ে ইলিশ বিক্রি করছে।
রাতে ক্রেতা কম থাকার কারণে ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে ২৬০ টাকায়। এতে প্রত্যেক কেজিতে ৬ টি মাছ পাওয়া যায়। আর ৩০০ টাকা কেজির ইলিশে ৫ টি মাছ পাওয়া যায়। এছাড়া ১ কেজি ৬০০ গ্রাম ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকা কেজি দরে। যা অন্য সপ্তাহের তুলনায় কেজি প্রতি ২০০ টাকা কম। ছোট ইলিশ দামে কিনে খুচরা বাজারে কম দামে বিক্রি করায় মাছের গুণগত মান নিয়ে শঙ্কায় আছেন ক্রেতারা।
বরগুনা পৌর মাছ বাজারের খুচরা ইলিশ বিক্রেতা হারুন অর রশিদ বাংলানিউজকে জানান, বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইলিশ থাকার কারণে দাম কিছুটা কম। গত সপ্তাহের তুলনায় ছোট ইলিশের দাম কম। তবে বড় ইলিশের দাম একই রয়েছে। তিনি বলেন, আমি স্থানীয় পাইকারি বাজার থেকে ১৭০ থেকে ১৮০ গ্রাম ওজনের ছোট ২০ কেজি ইলিশ ৩০০ টাকা কেজি দরে কিনে এখন ২৬০ টাকায় খুচরা বিক্রি করছি। ক্রেতা কম থাকায় অন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মাছ বিক্রি করতে গিয়ে কেজি প্রতি আমার ৪০ টাকা লোকসান গুণতে হয়েছে। ২৬০ টাকার এক কেজিতে ৫/৬ টি ইলিশ পাওয়া যায়।
বরগুনা ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সেলিম আহমেদ বলেন, বাজারে মাছের গুণগতমান পরীক্ষা করার জন্য আমরা বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করছি। বিষয়টি আমরা শুনেছি, তদন্ত করে দেখব মাছের গুণগতমান কেমন। প্রয়োজন সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কাযালয় সূত্রে জানা গেছে, বরগুনার ছয়টি উপজেলার ৩৭ হাজার ৯০৩ জন জেলেকে জাটকা নিধন নিষেধাজ্ঞার সময় ২০ কেজি চাল সহায়তা দেওয়া হয়। নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পরিচালক বাংলাদেশ নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট এম লুৎফর রহমান বলন, গত মাসের শেষ দিকে সাগরে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ জালে ধরা পড়ছে তাই দাম কমতে শুরু করেছে। গত বছরের তুলনায় ইলিশের দাম কম আছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বাংলানিউজকে বলেন, নদীতে ও সমুদ্রে মাছ ধরায় সরকার বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণে দিন দিন সব প্রজাতির মাছের সংখ্যা বাড়ছে। মৎস্য সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞাকালীন জাটকা ধরা, সংরক্ষণ, পরিবহন, বিপণন দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন অনুযায়ী নয় ইঞ্চি আকৃতির ইলিশ জাটকা হিসেবে গণ্য করা হয়। এ সময়ে যারা জাটকা আহরণ, বিপণন, পরিবহন করবেন, তাদের বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগের কারণেই জেলেরা বিরত থাকছে। আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশে সামুদ্রিক মাছের ঘাটতি থাকবে না। সরকারের আইন মেনে শিকার করলে মাছের প্রজনন বাড়বে।