রোববার (২৯ জুন) এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।
এর আগে ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্র লক্ষ্য করে সম্প্রতি হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এরমধ্যে অত্যাধুনিক বি-২ স্টিলথ বোমারু ব্যবহার করে ইরানের ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা হয়।
হামলার পরপরই মার্কিন গোয়েন্দারা তাদের প্রাথমিক মূল্যায়নে জানিয়েছিলেন, হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির মূল উপাদান ধ্বংস হয়নি। এ হামলা দেশটির পারমাণবিক কার্যক্রম শুধুমাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে দিয়েছে। যদিও গোয়েন্দাদের এমন দাবি অস্বীকার করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
প্রভাবশালী এই মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যতটা ক্ষতি হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল, বাস্তবে তা অনেক কম হয়েছে— এমন ইঙ্গিত মিলেছে ইরানি শীর্ষ কর্মকর্তাদের কথোপকথন থেকে।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স ইরানি শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কথোপকথন ধরে ফেলেছে। এসব আলাপে দেখা গেছে, ইরানি কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন— কেন ট্রাম্পের নির্দেশে চালানো হামলাগুলো প্রত্যাশিত মাত্রার ধ্বংস সাধন করতে পারলো না।
তবে এক শীর্ষ মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা ওয়াশিংটন পোস্টকে সতর্ক করে বলেছেন— শুধু একটি ফোনালাপ বা একক সূত্র থেকেই পুরো গোয়েন্দা মূল্যায়ন করা যায় না। তার ভাষায়, “একটা ফোন কল মানেই সম্পূর্ণ চিত্র নয়।”
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথসহ অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তা দাবি করছেন, ওই হামলায় ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।
অন্যদিকে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, হামলায় গুরুতর ক্ষতি হয়েছে ঠিকই, তবে গুরুত্বপূর্ণ অনেক উপাদান আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল, ফলে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি সীমিত হয়েছে।
তবে ট্রাম্প এই দাবিকে নাকচ করে দিয়ে বলেন, “ওরা কিছুই সরায়নি। ওরা ভাবেইনি আমরা এত কিছু করে ফেলবো।”
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন ও নিউইয়র্ক টাইমসের বরাতে জানা গেছে, ইরানের হামলার পর প্রাথমিক মার্কিন গোয়েন্দা মূল্যায়নে বলা হয়েছে— “এই হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কিছু মাসের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে মাত্র, দীর্ঘমেয়াদে নয়।”
কিন্তু হোয়াইট হাউস এই মূল্যায়নকে মানতে নারাজ। সিআইএ পরিচালক জন র্যাটক্লিফও বলেছেন, “নতুন গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় এমন ‘গভীর ক্ষতি’ হয়েছে, যেটা পুনর্গঠনে ইরানের কয়েক বছর লাগবে।”