আজ বেইজিংয়ে রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ ও ইরানি উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম গারিবাবাদির সঙ্গে পারমাণবিক বিষয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। এএফপির খবর।
মা ঝাওসু আরও বলেন, ‘আমরা পারমাণবিক বিষয় এবং নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে গভীর মতবিনিময় করেছি। আমরা সব অবৈধ একতরফা নিষেধাজ্ঞার অবসানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছি।’
এর আগে গত বুধবার (১২ মার্চ) ইরান ও রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের বিষয়ে জানান চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং। নিয়মিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শুক্রবার বেইজিংয়ে পারমাণবিক সংকট নিয়ে বৈঠকে বসবে ইরান, রাশিয়ার ও চীন। সেখানে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করা হবে, যা আন্তর্জাতিক দৃষ্টিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

গত কয়েক বছর ধরে ইরান ও রাশিয়ার সম্পর্ক গভীর হয়েছে, বিশেষ করে ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দুই দেশের মধ্যে একটি কৌশলগত সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা তাদের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে। উভয় দেশই চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে।
চীন এই বৈঠকটি আয়োজনের মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক সমঝোতা পুনরুদ্ধার এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য সংলাপের পরিবেশ তৈরি করতে চায়। ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালনা করার দাবি করে, তবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এমন এক সময়ে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো, যেদিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি গোপনীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে ইরানের ইউরেনিয়াম মজুত সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা (আইএইএ) সতর্ক করেছে, ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ হার ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে ফেলেছে, যা ৯০ শতাংশ অস্ত্র-গ্রেড স্তরের কাছে চলে এসেছে।

অন্যদিকে গত সপ্তাহে রাশিয়া জানিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার বিষয়ে রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ মস্কোয় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালির সঙ্গে আলোচনা করেছেন। দেশটি ইরানের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের আলাপ-আলোচনায় যোগসূত্র হিসেবে কাজ করবে।
২০১৫ সালে ব্রিটেন, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরান একটি যৌথ কর্মপরিকল্পনা চুক্তিতে যায়। এর ফলে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে বিধিনিষেধ আরোপের বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালে ওয়াশিংটন এই পরিকল্পনা থেকে বেরিয়ে আসে এবং ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসতে শুরু করে।