পুরো ইউরোপজুড়ে করোনা ভাইরাসের টিকা ও টিকার সনদ বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। হাজার হাজার মানুষ মাস্ক না পরে রাস্তায় নেমে এ বিক্ষোভ করেন।
ইউরোপ জুড়ে যে দাবি নিয়ে তারা বিক্ষোভ করছে, তা হলো: টিকার সনদ নিয়ে কড়াকড়ি করা যাবে না। যারা টিকা নেননি, তাদেরও সব জায়গায় যেতে দিতে হবে। কোভিডবিধি নিয়ে কড়াকড়ি করা যাবে না। কোনো কোনো পেশার ক্ষেত্রে টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করার যে পরিকল্পনা বিভিন্ন দেশের সরকার করেছে, তা বাতিল করতে হবে।
এএফপি ও রয়টার্সের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েকদিনে ইউরোপের একাধিক দেশে কোভিডের বিপুল বৃদ্ধি ঘটেছে। বেড়েছে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও। চিকিৎসকরা বলছেন, যাদের টিকা নেওয়া নেই, তারাই এবার হাসপাতালে বেশি ভর্তি হচ্ছেন।
ইউরোপের দেশে দেশে প্রতিবাদ
ব্রাসেলস: বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে রোববার (৯ জানুয়ারি) প্রায় গোটা দিন ধরেই প্রতিবাদ চলে। প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ মাস্ক না পরে সেই প্রতিবাদ সভায় অংশ নেন। তাদের হাতের পোস্টারে লেখা ছিল, টিকা নিয়ে বাড়াবাড়ি করা যাবে না। ‘ভ্যাকসিন একনায়কতন্ত্র’ বন্ধ করতে হবে। বেলজিয়ামে টিকার সনদ না দেখালে রেস্তোরাঁ, পাব, বারে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। একেই টিকা একনায়কতন্ত্র বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
চেক রিপাবলিক: চেক রিপাবলিকের রাজধানী প্রাগে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখিয়েছেন। সম্প্রতি চেক রিপাবলিকের সরকার একটি নতুন নিয়ম চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে। পুলিশ, স্বাস্থ্যকর্মী, দমকলকর্মী, ছাত্রদের টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হবে। ৬০ বছরের ওপরের ব্যক্তিদেরও টিকা বাধ্যতামূলকভাবে নিতে হবে। এরই প্রতিবাদে রোববার রাস্তায় নামে টিকাবিরোধী জনগণ। তাদের স্লোগান ছিল ‘স্বাধীনতা চাই’। দ্রুত নতুন প্রস্তাব ফিরিয়ে নিতে হবে বলে জানিয়েছে তারা। প্রতিবাদের মুখে কিছুটা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে দেশের প্রশাসন। ৬০ বছরের ওপরের ব্যক্তিদের বাধ্যতামূলক টিকার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে বলে জানানো হয়েছে।
জার্মানি: গত কয়েক দিন ধরে জার্মানির একাধিক শহরে লাগাতার বিক্ষোভ চলছে। হ্যামবুর্গ থেকে ডুসেলডর্ফে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে টিকা ও টিকা সনদের বিরোধিতা করছেন। করোনার জন্য সরকার যেসব বিধিনিষেধ চালু করেছে, তারও বিরোধী তারা। রাস্তায় সহিংস প্রতিবাদও হয়েছে। কাঁদানে গ্যাস চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের সরাতে হয়েছে পুলিশকে।
অস্ট্রিয়া: অস্ট্রিয়াতেও রোববার প্রায় ৪০ হাজার মানুষ প্রতিবাদ দেখিয়েছেন।এভাবেই ইউরোপের আরও অনেক দেশে টিকাবিরোধী প্রতিবাদ চলছে। এর জেরে দেশগুলোতে করোনা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।