প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশিন (ইসি)। তালিকায় দেখা গেছে, প্রথম ধাপে ইউপি নির্বাচনে বিনাভোটে ২৭ জন প্রার্থী নির্বাচিত হচ্ছেন।
ইসি সূত্র জানায়, প্রথম ধাপের ৩৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন ১ হাজার ৭৫২ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ১ হাজার ৯৯ জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী। বাকি ১১টি রাজনৈতিক দলের ৬৫৩ জন প্রার্থী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনীত হয়েছেন। তবে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দল থাকলেও ইউপি নির্বাচনে ১১টি দল প্রার্থী দিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথম ধাপে ৩৭১টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পদে মোট ২০ হাজার ৫১৭ জন প্রার্থী মনোনীত হয়েছে। এর মধ্যে ২৭ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ১ হাজার ৭৫২ জন। সদস্য পদে ১৪ হাজার ৪৩৫ জন এবং সংরক্ষিত আসনের সদস্য পদে ৪ হাজার ৩০৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিল ১৮ মার্চ। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয় ১৯ মার্চ। এরপর বাতিল বা বৈধ ঘোষণা করা মনোনয়নপত্রের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ রয়েছে। এসব আপিল নিষ্পত্তি এবং ২৪ মার্চ প্রত্যাহারের শেষ তারিখের পর প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা কমে যেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, হয়তো ওইসব এলাকার জনগণ চিন্তা করছে নির্বাচন হলে হানাহানি, মারামারিতে অনেক লোক মারা যাবে। তাই কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি, এটাও এক ধরনের চিন্তা হতে পারে। কারণ নির্বাচন মানেই তো এখন হানাহানি। হানাহানি বন্ধ করার যে হাতিয়ার ইসির কাছে আছে, সে হাতিয়ার তারা ব্যবহার করে না। শুধু এই নির্বাচনে নয়, তারা কোনো নির্বাচনেই এই হাতিয়ার ব্যবহার করে না।
তিনি বলেন, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ইসির বিশাল ক্ষমতা আছে, এটা তারা ব্যবহার করতেই শেখেনি। যার ফলে সব নির্বাচনই এখন ইচ্ছার ওপর। নির্বাচন মানেই এলাকার ক্ষমতাশীল লোকজনদের ইচ্ছা অনুযায়ী হবে। নির্বাচন কমিশনের এখানে কিছু করার নেই।
গণতান্ত্রিক দেশে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া আইন পরিপন্থী কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে মনজিল মোরসেদ বলেন, গণতন্ত্র বাদ দেন শুধু উনাদের (ইসি) হাতে যে আইনটা আছে, সেই আইনেরও পরিপন্থী। কারণ আপনি একটা এলাকায় নির্বাচন করবেন সেখানে প্রার্থীরা যদি যেতে না পারে, সেটা নির্বাচন কমিশনকে জানালে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। অথবা যে বাধা দিচ্ছে তার প্রার্থিতাও বাতিল করার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। ক্ষমতা ব্যবহার না করে ইসি যদি তা পকেটে রেখে দেয় তাহলে ভবিষ্যতেও এর মাত্রা বাড়বে। ইসিকে নির্বাচন পরিচালনার জন্য শত শত কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ বরাদ্দের দরকার নেই বরং লটারির সিস্টেম করে দেওয়া ভালো। নির্বাচন লটারির মাধ্যমে করে দিলে বরাদ্দ দেওয়া অর্থের অপচয় হবে না।