রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে কেবল সামরিক সরঞ্জামই সীমান্তে মজুত করছে না, রক্তের ব্যাগও মজুত করছে বলে তিন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তবে তারা নাম প্রকাশ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি। আহতদের জন্য এসব রক্ত মজুত করা হচ্ছে। এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পূর্ব ইউরোপে সৈন্য পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইউক্রেন সীমান্ত সফর করবেন এবং রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে উত্তেজনার মধ্যেই সামরিক মহড়া দিয়েছে ইউক্রেন। রক্তের ব্যাগ মজুত করছে রাশিয়া, সৈন্য পাঠাচ্ছেন বাইডেন
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্ভাব্য যুদ্ধে আহত রুশ সৈন্যদের যাতে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া যায় সেজন্য মস্কো ইউক্রেন সীমান্তে শত শত রক্তের ব্যাগ মজুত করছে। বর্তমান এবং সাবেক মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এর মাধ্যমে প্রমাণ হয় যে, রাশিয়ার প্রতিবেশী ইউক্রেনের ওপর হামলার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাত্ক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে গভীর উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুক্রবারও অভিযোগ করেছেন, পশ্চিমা বিশ্ব তার দেশের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তারপরও তিনি আলোচনা চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন। পুতিন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ সঙ্গে ফোনালাপে বলেছেন, তিনি ওয়াশিংটন এবং ন্যাটোর জবাবের বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছেন। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্ট্রিন বলেছেন, তারা এখনো বিশ্বাস করেন না যে প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনে হামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্যের মধ্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পূর্ব ইউরোপের সীমান্তে সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন। খুব শিগগিরিই তাদের মোতায়েন করা হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী শুক্রবার পেন্টাগনে এক সংবাদ সম্মেলনেও বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সাড়ে ৮ হাজার সৈন্য প্রস্তুত রেখেছে।
সীমান্ত পরিদর্শন করবেন বরিস
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন। চলতি সপ্তাহেই তিনি কথা বলার পর পূর্ব ইউরোপের ইউক্রেন সীমান্ত পরিদর্শনে যাবেন। ব্রিটেনে কূটনৈতিক পথে সমস্যার সমাধানের আশা করছে। ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট এ তথ্য জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বরিস রাশিয়াকে হামলা থেকে ফেরাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী বরিস বলেছিলেন, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালালে মিত্রদের সহায়তায় সৈন্য পাঠাবে।
ইউক্রেনের সামরিক মহড়া
সীমান্তে রুশ সেনাদের উপস্থিতিতে যে কোনো হামলার আশঙ্কায় থাকা ইউক্রেনের সেনারা ব্রিটেনের দেওয়া নতুন অস্ত্র নিয়ে অনুশীলন করেছে। গত শুক্রবার সাদা-কালো শীতের উর্দি পরে সেনারা ট্যাংক বিধ্বংসী লঞ্চার নিক্ষেপ করে। রাশিয়া হামলার মুখে প্রতিরক্ষার জন্য ইউক্রেনকে এসব অস্ত্র দিয়েছে ব্রিটেন। ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক সেনার সমাবেশ ঘটিয়ে ইউরোপে নতুন নিরাপত্তা নিশ্চয়তার দাবিতে পশ্চিমাদের আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য করেছে রাশিয়া।