উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে জড়ানোর অভিযোগে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) ২৬ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
শনিবার (২১ জুন) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখার পরিচালক আবু সা’দাত মো. মুনতাসিরবিল্লা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সভা করে স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা রাত ৮টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন, সে সময়ের মধ্যেই আমরা সিদ্ধান্ত জানিয়েছি। এটাই শিক্ষার্থীদের মূল দাবি ছিল।’
যারা বহিষ্কৃত ছিলেন, তারা চলতি স্প্রিং সেমিস্টার থেকে ক্লাস চালিয়ে যেতে পারবেন উল্লেখ করে মুনতাসিরবিল্লা বলেন, যাদের দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল, তারা ক্লাসে ফিরবেন ফল সেমিস্টার থেকে। তবে প্রত্যাহারের নোটিশে এমন কিছু শর্ত উল্লেখ থাকায় শিক্ষার্থীরা এখনও আন্দোলন প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাননি।
এর আগে, বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারসহ একাধিক দাবিতে রাজধানীর নতুনবাজার এলাকায় সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এতে রাজধানীর নতুনবাজার এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
অবরোধে নতুন বাজার-গুলশান-বনশ্রী সংযোগ সড়কে যান চলাচলে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটে। সেখানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ২৬ ও ২৭ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের অসন্তোষের জেরে উপাচার্যসহ ১১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। এরপর ২৮ এপ্রিল ইউআইইউ কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য সব শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে। যদিও ২০ মে থেকে অনলাইন ক্লাস শুরু করা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের একটি অংশ তা প্রত্যাখ্যান করে ক্যাম্পাসে সরাসরি ক্লাস ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা দাবি করে আসছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের যৌক্তিক ১৩ দফা দাবি দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষা করে আসছে। বরং আন্দোলন দমন করতে বহিষ্কার ও তদন্তের ভয় দেখানো হচ্ছে। ট্রাস্টি বোর্ড থেকে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দেওয়া এক খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে, ২৬ মের মধ্যে যারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে চায়, তারা ভর্তি বাতিল করলে পূর্ণ টিউশন ফির অর্থ ফেরত পাবে। তবে যেসব শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা এই সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় না ছাড়লে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে পারেন বলেও জানানো হয়।
এদিকে, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) জানিয়েছে, তারা বিশ্ববিদ্যালয়টি দ্রুত সচল করতে ট্রাস্টি বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।