বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভীত নড়বড়ে হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, এই পদযাত্রা আওয়ামী লীগের পতন যাত্রা। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষায়।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কমলাপুর স্টেডিয়াম সামনে থেকে গণপদযাত্রা শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে চার দিনের পদযাত্রার শেষ দিনের এই কর্মসূচির আয়োজন করে মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই- গণতান্ত্রিক সরকারের হুকুমে দেশ চলবে, অন্য কারও হুকুমে নয়। এখনতো সরকার নেই, এখন অবৈধ দানব আমাদের ঘাড়ের ওপর চেপে বসেছে। এই দানবকে ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে, এই দানবকে ঘাড়ে রেখে দেশের কোনো উন্নয়ন, দেশের মানুষের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
বিএনপির ছেড়ে দেওয়া ৬ আসনে বুধবার একযোগে ভোটগ্রহণ চলছে। এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ভোটকেন্দ্রে কুত্তা ঘুমিয়ে আছে। পুলিশ আজ ভোটারদের ভোট দিতে কেন্দ্রে আসতে মাইকে ডাকছে- এটাই এই সরকারের চিত্র।
মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ বলছে- সংবিধানের বাইরে কোনো নির্বাচন হবে না। এই সংবিধানকে কেটে-ছিঁড়ে আপনারা যা করেছেন; এই সংবিধানের অপমান করেছেন। আওয়ামী লীগ এবং জামায়াত ইসলামী মিলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছিলেন। তারা বলেছিল- এই মুহূর্তে দরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার। আজকের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন সারা জীবনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাই।
বিএনপি চিৎকার করলেও আওয়ামী লীগ ভয় পায় দাবি করে তিনি বলেন, আমরা চুপ থাকলেও আওয়ামী লীগ ভয় পায়। তারা টের পেয়ে গেছে বেশিদিন আর ক্ষমতায় নেই। তাই এ মুহূর্তে দরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তারা আমাদের বলে বিএনপি-জামায়াত। আমি বলি আওয়ামী-জামায়াত।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এ দেশের মানুষ শান্তিপ্রিয়। কিন্তু তারা প্রয়োজনে এমন শক্ত হয়, তখন তাদের মতো আর কেউ নেই। এই সরকারকে এখন মানুষ বিশ্বাস করে না। হাসিনা সরকার আগে বলেছে- ঘরে ঘরে চাকরি। এখন দিচ্ছে উপদেশ- ব্যবসা করেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে জেলে নিয়েছেন। আমরা জেলে যেতে ভয় পাই না। আমরা সফল হব আমাদের আন্দোলনে। আমরা শৃঙ্খলিতভাবে আমাদের কর্মসূচি শেষ করব।
ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় পদযাত্রা কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকন, হাবিবুর রহমান হাবিব, মীরা সরাফত আলী সপু, আব্দুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, ডা. রফিকুল ইসলাম, নবী উল্লাহ নবী, কাজী আবুল বাশার, রবিন, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, সাইফুল আলম নিরব, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস প্রমুখ উপস্থিত আছেন।
উল্লেখ্য, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছাড়াও নানা দাবিতে গত ২৮ জানুয়ারি রাজধানীর বাড্ডা থেকে রামপুরা হয়ে মালিবাগ হোটেল পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। এরপর ৩০ জানুয়ারি একই দাবিতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে শুরু হয়ে শ্যামপুর পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। সবশেষ গতকাল মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) গাবতলী থেকে শুরু হয়ে মাজার রোড ঘুরে মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি।