হজযাত্রীদের সঙ্গে কোনো প্রতারণা বা হয়রানি করলে এজেন্সিগুলোকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) আয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা সম্মেলন-২০২২ এবং হজ ও ওমরাহ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ হুঁশিয়ারি দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হজযাত্রীদের সঙ্গে কোনো এজেন্সি প্রতারণা বা হয়রানি করলে সেই এজেন্সির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আগামী দিনগুলোতেও আল্লাহর ঘরের মেহমানদের যারা হয়রানি করবে, তাদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। এটা মনে রাখতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন-২০২১ এবং হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০২২ প্রণয়ন করেছি। এর ফলে হজ কার্যক্রমে অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগের প্রতিকার হয়েছে। আগামীতে যারা হজে যাবেন তাদের হজের পাশাপাশি সৌদি আরবের সমস্ত নিয়মকানুন এবং আইন সম্পর্কে জানা এবং মেনে চলার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান।
সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম। এই শান্তির ধর্ম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম। অথচ এই ধর্মকে কিছু জঙ্গিবাদের কারণে অপমানজনক কথা শুনতে হচ্ছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা ইসলামের খেদমতের জন্য অনেক কাজ করে গিয়েছেন। আমরা তার উত্তরসূরি হিসেবে ইসলাম ও জনগণের উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনের আগে দেওয়া বেতার ভাষণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ উদ্ধৃত করেন। জাতির পিতা বলেছিলেন- ‘আমরা ইনসাফের ইসলামে বিশ্বাসী। আমাদের ইসলাম হজরত নবী করীম (সা.) এর ইসলাম, যে ইসলাম জগতবাসীকে শিক্ষা দিয়েছে ন্যায় ও সুবিচারের অমোঘ মন্ত্র।’
অতীতে হজযাত্রীদের নিয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল, দালাল-প্রতারকদের প্রতারণা, হজযাত্রী পরিবহণে চরম বিশৃঙ্খলা ও অনিয়মের ঘটনার স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ২০০৯ সালে আমাদের সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই হজ ব্যবস্থাপনাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিশ্বমানে উন্নীত করতে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপেরও উল্লেখ করেন।
এর মধ্যে রয়েছে- ই-হজ ব্যবস্থাপনা, হজযাত্রীর প্রাক-নিবন্ধন, নিবন্ধন, ই-হেলথ প্রোফাইল তৈরি, ই-টিকিট, হজযাত্রী পরিবহণ, মক্কা-মদিনায় আবাসন ব্যবস্থা, চিকিৎসাসেবা প্রদানসহ সব ক্ষেত্রে ই-হজ ব্যবস্থাপনা। পাশাপাশি জেদ্দায় পৃথক হজ অফিস স্থাপন এবং সেখানে একজন কাউন্সিলর (হজ) ও একজন কনসাল জেনারেল (হজ) নিয়োগ দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।