কলকাতার আর জি কর আন্দোলনকে ঘিরে যারা রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করছেন, তাদেরকে সতর্কবার্তা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে আন্দোলনকারীদের মধ্যে যারা দূর্গাপূজা বয়কট করার ডাক দিয়েছেন, তাদের কঠোর সমালোচনাও করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের সচিবালয় ভবন নবান্নে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সাম্প্রতিক পরিস্থিতিকে ঘিরে বাংলা (পশ্চিমবঙ্গ) তার মর্যাদা হারাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর গ্রুপ তৈরি হচ্ছে, যাদের প্রধান কাজ হয়ে উঠেছে বাংলা নিয়ে ভুয়া সংবাদ ছড়ানো। এক তরফা তথ্যের ভিত্তিতে তারা বাংলার বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে। আর যারা এসব বিশ্বাস করছে, তারাও কোনো ধরনের যাচাই ছাড়াই বিশ্বাস করছে।”
অপপ্রচারকারীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা কি বাংলাদেশ পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছেন? মনে রাখবেন, বাংলাদেশ এবং ভারত দু’টি আলাদা দেশ। আমরা বাংলাদেশকে সম্মান করি, সেই দেশের ভাষাকে শ্রদ্ধা করি, কিন্তু এই অঞ্চল কখনও বাংলাদেশ হবে না।”
আর জি কর আন্দোলনকারীদের মধ্যে যারা রাতের পর রাত সড়ক দখল কর্মসূচী পালন করছেন, তাদের সমালোচনা করে মমতা বলেন, “প্রতি রাতে সড়ক দখল কর্মসূচী অনেকের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করছে। বাসাবাড়িতে অনেক বয়স্ক মানুষ আছেন, লাউডস্পিকারের শব্দের কারণে যাদের ঘুমের সমস্যা হয়ে। নাগরিকবিধি অনুযায়ী কোনো আবাসিক এলাকায় রাত ১০টার পর মাইক্রোফোন চালু রাখা নিষিদ্ধ, কিন্তু আমরা এই আদেশকে একেবারেই পাত্তা দিচ্ছি না। “
“আন্দোলনের এক মাস হতে চলল। সামনে দূর্গাপূজা আসছে। দেশ-বিদেশ থেকে বহু মানুষ প্রতি বছর দূর্গাপূজায় এখানে আসেন, অনেক পর্যটকও আসেন। আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, দয়া করে উৎসবের আবহে ফিরে আসুন। ঢাকী, প্রতিমা নির্মাণকারীসহ বহু মানুষের জীবন-জীবিকা এই দূর্গাপূজার ওপর নির্ভর করে। দয়া করে তাদের ক্ষতি করবেন না।”
আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘাত নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশকে আগ বাড়িয়ে হামলা না করার নির্দেশ দেওয়া আছে। তারা নির্দেশ মেনেই চলছে। কিন্তু যারা পুলিশের ওপর হামলা চালাচ্ছেন, মারধোর করছেন, মনে রাখবেন— তাদেরও পরিবার রয়েছে, স্বজন রয়েছে।”
দূর্গাপূজাকে ঘিরে যেন ধর্মীয় বিদ্বেষ না ছড়ানো হয়— সেই সতর্কবার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যে কেউ যে কোনো থিম অবলম্বনে পূজার প্যান্ডেল সাজাতে পারেন, তবে অবশ্যই এমন কোনো কাজ করবেন না— যা সাম্প্রদায়িক বিভেদ-বিদ্বেষকে উসকে দেয়।”