হৃদয় ও পরান একই এলাকার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ। কিন্তু আর্থিক সংকটে পরান ও তার সহযোগীরা হৃদয়কে অপহরণ করে তার পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী অপহরণের পর হৃদয়ের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ না পেয়ে তাকে হত্যা করে মরদেহ একটি পরিত্যক্ত ডোবায় ফেলে দেয় তারা।
এ ঘটনায় রাজধানীর পল্লবী ও নওগাঁ জেলায় পৃথক অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তারা হলো আকাশ (২২) ও শাহীন ওরফে বাবু (২৬)।
শুক্রবার (১৯ মে) বিকেলে র্যাব-৪ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি মাজহারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
এএসপি মাজহারুল ইসলাম বলেন, হৃদয় ঢাকার আশুলিয়া থানার জামগড়া এলাকার বাসিন্দা। প্রতিদিনের মতো গত ৮ মে বাসা থেকে বের হয় হৃদয়। এর পর তার আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। ওই দিনই হৃদয়ের বাবার কাছে ফোনের মাধ্যমে অজ্ঞাতপরিচয়ে এক ব্যক্তি মুক্তিপণ দাবিসহ হুমকি দেন।হৃদয়কে জীবিত ফেরত পাওয়ার শর্তে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি হুমকি দেওয়া হয়।
এ পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী হৃদয়ের বাবা আশুলিয়া থানায় নিখোঁজের একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন এবং র্যাব-৪ বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন। এ ঘটনার ছায়া-তদন্ত শুরু করে র্যাব। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
এএসপি আরও বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল আশুলিয়া থানা এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত হৃদয়ের মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূলহোতা পরান ও বাপ্পিকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর পল্লবী ও নওগাঁ জেলায় র্যাবের পৃথক আভিযানে আসামি আকাশ ও শাহীন ওরফে বাবুকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। আর্থিক সংকটের কারণে পরান ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে হৃদয়কে অপহরণের পরিকল্পনা করে আসছিল।
মূলহোতা পরান ও বাপ্পিসহ গ্রেফতার আকাশ এবং শাহীন আর্থিক সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে হৃদয়কে অপহরণ করে তার পরিবারের কাছে মোটা অংকের টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করে আসছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৮ মে বিকেলে আড্ডা দেওয়ার কথা বলে আকাশের বাসায় নিয়ে যান হৃদয়কে। এরপর সেখানে রশি দিয়ে বেঁধে ফোনে হৃদয়ের বাবার কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু টাকা না পেয়ে হৃদয়কে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে মুখে বালিশ চাপা দেওয়া হয়। পরে মরদেহ বস্তাবন্দি করে শ্রীপুরের একটি পরিত্যক্ত ডোবায় ফেলে দিয়ে আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়।