১৪২ কোটিরও বেশি মানুষ অধ্যুষিত ভারতকে গত বছর বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। সম্প্রতি পৃথিবীর বৃহত্তম এই বৈশ্বিক সংস্থা বলেছে, আগামী আরও অন্তত একশ বছর বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের রেকর্ড ধরে রাখবে ভারত।
বৃহস্পতিবার বৈশ্বিক জনসংখ্যা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। ‘দ্য ওয়ার্ল্ড পপুলেশন প্রসপেক্টস ২০২৪’ নামের সেই প্রতিবদেনে বলা হয়েছে, ভারতসহ গোটা বিশ্বে আগামী ৫০ থেকে ৬০ বছর জনসংখ্যা বাড়তে থাকবে এবং এই বৃদ্ধি চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে ২০৮৪-’৮৫ কিংবা ২০৮৬ সালে। সে সময় বিশ্বের জনসংখ্যা পৌঁছাবে ১০ হাজার কোটি ৩০ লাখে। তারপর ফের কমতে শুরু করবে জনসংখ্যা এবং এই শতকের শেষে— ২১০০ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা হবে ১০ হাজার কোটি ২০ লাখ।
ভারত প্রসঙ্গে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ‘ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির যে বর্তমান হার, তা বজায় থাকলে ২০২৪ সালের শেষ পর্যায়ে ভারতের জনসংখ্যা পৌঁছাবে ১৪৫ কোটিতে। এই সংখ্যা বাড়তে থাকবে ২০৬০ সাল পর্যন্ত। ওই বছর জনসংখ্যা পৌঁছাবে ১৭০ কোটিতে।’
‘চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর পর থেকে কমতে শুরু করবে জনসংখ্যা, তবে তার হার খুব বেশি হবে না। ২১০০ সালে দেশটির জনসংখ্যা হবে ১ কোটি ৫০ লাখের কিছু বেশি। শতকরা হিসেবে, ২০৬০ সাল থেকে ২১০০ সালের মধ্যে ভারতের জনসংখ্যা কমবে ১২ শতাংশ।
‘কিন্তু তারপরও শতাব্দির শেষ পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ থাকবে ভারত। কারণ এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্য কোনো দেশ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের হিসেবে ভারতের খুব কাছাকাছি নেই।’
প্রসঙ্গত, ১৯৫০ সাল থেকে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের তালিকা করে আসছে জাতিসংঘ। সেই তালিকার শীর্ষে প্রথমবারের মতো ২০২৪ সালে আসে ভারতের নাম।
এ তালিকায় একসময় শীর্ষে থাকতো চীন; কিন্তু দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এক সন্তান নীতি কঠোরভাবে মেনে চলার মাধ্যমে দেশটি এখন জনসংখ্যা বৃদ্ধি অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে। তবে এখন দেশটির সামনে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো কর্মক্ষম যুবশক্তির তুলনায় বৃদ্ধ লোকজনের আধিক্য।
এদিকে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ভারতের জনসংখ্যার কথা বলা হলেও, ভারতীয় সরকার জানে না এখন দেশটিতে ঠিক কতজন মানুষ বসবাস করেন। কারণ ২০১১ সালের পর ভারতে আর জনশুমারি হয়নি। ২০২১ সালে নতুন করে আবারও শুমারি হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারির কারণে তা পিছিয়ে দিতে হয়।
জাতিসংঘের প্রতিবেদন থেকে আরও জানা গেছে, ভারতের বর্তমান জনসংখ্যার ৪ ভাগের ১ ভাগের বয়স ১৪ বছরের নিচে। মোট জনসংখ্যার ৬৮ শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে। আর ৭ শতাংশের বয়স ৬৫ বছরের উপরে।