বিএনপির আন্দোলন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, এটি অধিকার ফিরে পাওয়ার লড়াই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে অনেকে নিহত হয়েছে। অনেকে স্বামী হারিয়েছে, বাবা হারিয়েছে, ছেলে হারিয়েছে, ভাই হারিয়েছে। মানব সভ্যতার ইতিহাস বলে আত্মত্যাগ কোনোদিন বৃথা যাবে না।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) দুপুরে ডিআরইউতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সম্প্রতি বিএনপির আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে আয়োজিত এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। এ স্মরণসভার আয়োজন করে অর্পণ বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, শহীদের রক্তের স্রোত, মায়ের অশ্রু ধারা কখনো বৃথা যেতে পারে না। লড়াই শুরু করেছি অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য। আমাদের লড়াই ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। একটি আধুনিক, কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা লড়াই করছি, ন্যায়বিচারের জন্য। এই লড়াইয়ে আমরা অনেক দূরে গিয়েছি। প্রতিদিন আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের সব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে অতি শিগগিরই এই লড়াইয়ে জয়ী হব।
দেশ যে এই পরিস্থিতিতে পড়বে তা কখনো ভাবিনি— মন্তব্য করে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে মনে হয় এ কেমন দেশ আমরা তৈরি করলাম? যে দেশে মানুষের সম্মান থাকবে না, প্রাণের কোনো নিশ্চয়তা থাকবে না, বেঁচে থাকার কোনো নিশ্চয়তা থাকবে না। আমার ভোট দিতে পারব না। আমার প্রতি অন্যায় হবে সে কথা বলতে পারব না, আইনজীবীরা কোর্টে পুলিশের হাতে পিটুনি খাবেন। সেই দেশটা আমরা চিন্তা করিনি, কোনোদিন ভাবিনি।
মির্জা ফখরুল, এ ধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে আমার আসতে ইচ্ছে করে না। গত ১৫ বছর ধরে এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে আমরা আসি। কষ্ট পাই, পরিবারগুলো কষ্ট পায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা তাদের জন্য খুব বেশি কিছু করতে পারিনি।
সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিক ও আইনজীবীদের ওপর হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিচারপতির কাছে গিয়েছিলেন আমাদের আইনজীবীরা। তিনি বলেছেন, আমার যদি কিছু করার থাকে তাহলে করব। তিনি যদি এ কথা বলেন তাহলে কোথায় যাব? কার কাছে যাব? এ দেশের মানুষ কোথায় যাবে?
অর্পণ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান বিথীকা বিনতে হোসাইনের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় উপস্থিতি ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাঈফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।