জিয়াউর রহমানের রাজনীতি কর্মনির্ভর। আর যারা জিয়াউর রহমানকে অপছন্দ করেন তাদের রাজনীতি হলো ভাষণনির্ভর। অনেকের কথা বেশি। জিয়াউর রহমান কথা কম বলতেন, কাজ বেশি করতেন। তিনি অচল অবস্থা থেকে জাতিকে সচল করেছেন। তার প্রতি সবার কৃতজ্ঞতা থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। শুক্রবার (৪ জুন) বিকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেছেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমি জিয়ার কথাই বলবো। একবার বলবো, বারবার বলবো। আমি জিয়ার পথেই চলবো এবং জিয়ার কথাই বলবো। আমাদের এই রাষ্ট্রীয় জীবনে জিয়াউর রহমান আকস্মিকভাবে উপস্থিত হয়েছিলেন জাতির ক্রন্তিলগ্নে। ব্যাংক বীমা, শিল্প কল-কারখানা এবং কৃষি বিপ্লব অর্থাৎ বহুমুখি কর্মপন্থা নিয়ে ১৯ দফার ভিত্তিতে তিনি তার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। বাংলাদেশে প্রথম তিনিই একমাত্র সরসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি।
গয়েশ্বর আরো বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমানই প্রথম নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। প্রশ্ন আসতে পারে তিনি রাষ্ট্রপতি কেন। যেহেতু তিনি সেনা বিদ্রোহ করেছেন এবং সেনা বিদ্রোহের মধ্যে দিয়ে স্বাধীন বাংলার শব্দটি উচ্চারণ করেছেন, জনগণকে অবহিত করেছেন তাহলে তো একটি সরকার দরকার। সেই কারণেই তিনি তখন নিজেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা দেন।
স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরো বলেন, পরবর্তীতে তিনি তা সংশোধন করেন। কিন্তু তিনি রাষ্ট্রপতি নন একথা বলেননি। তিনি বলেছিলেন আমি মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা দিচ্ছি। কার? অর্থাৎ আমাদের মহান নেতা শেখ মুজিবের পক্ষে তার অবর্তমানে। তিনি কিন্তু বলেননি শেখ মুজিবের নির্দেশে। সে কারণেই আজকে যারা নাকি বলে বেতারের মাধ্যমে অথবা চিরকুটের মাধ্যমে কে বা কারা, যিনি দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। তার জীবদ্দশায় তিনি একথা কখনও বলেননি, দাবিও করেননি। আজকে যারা এটি করতে চায় জিয়াউর রহমানকে বাদ দিয়ে অন্যকে প্রতিষ্ঠিত করে, ইতিহাসকে মুছে ফেলতে চায় তারা একটি ভুল কাজে হাত দিয়েছেন। বরং জিয়াউর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা থাকা উচিত।
ঢাকা জেলা, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির উদ্যোগে এই সভা হয়। তবে এই সভার বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির শীর্ষ দুই নেতার বিরুদ্ধে গ্রুপিংয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। যে কারণে তারা সভার বিষয়ে জেলার আহ্বায়ক কমিটির কয়েকজন সদস্যকে জানাননি। জানতে চাইলে জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহমুদুর রহমান সুমন বলেন, সভা সম্পর্কে আমাকে জানানো হয়নি। কেনো জানানো হয়নি জানি না। অন্য মাধ্যমে সভা হওয়ার কথা জানতে পেরে জেলার আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি, পায়নি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য দেন- চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক প্রমুখ।