জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত অস্থায়ী কর্মচারীরা আমরণ অনশনে বসেছেন।
রোববার (৩০ জুলাই) থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন কর্মসূচী চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন।
এরআগে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে গত সোমবার (১৭ জুলাই) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে ১৩ দিনের মতো অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন তারা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৪২ জন অস্থায়ী কর্মচারী আছেন। যাদের দৈনিক ৪০০ টাকা হারে মজুরি দেওয়া হয়। যা বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী খুবই স্বল্প। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানান তারা। শুধু তাই নয় তাদের নেই কোন ছুটি। একদিন ছুটিতে গেলে ওইদিন আর কোনো টাকা পান না।
চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে ২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনবার প্রশাসনকে স্বারকলিপি প্রদান করেছেন এবং একই দাবিতে মানববন্ধন করা হলে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার অস্থায়ী কর্মচারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থায়ীকরণের আশ্বাস দেন।
সর্বশেষ চলতি বছরের ২ জানুয়ারি চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন তারা। তখন প্রশাসনের আশ্বাস ছিলো ৬ মাসের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন হল, বিভাগ ও অফিসসমূহে নিয়োগ দেওয়া হবে। মৌখিক আশ্বাসের ভিত্তিতে অনশন স্থগিত করেন তারা। তবে আশ্বাসের ৬ মাস অতিবাহিত হলেও তার কোন বাস্তবায়ন না হওয়ায় আবারও আন্দোলনে বসেছেন তারা।
কর্মচারীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন হল এবং কিছু বিভাগে নতুন করে ৪১ জন কর্মচারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে একজনও দৈনিক মুজুরি ভিত্তিতে কর্মরত কর্মচারীদের মধ্যে থেকে নয়।
প্রচণ্ড গরমের কারনে অনশন কর্মসূচী পালন করা কর্মচারীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলেও জানা যায়।ফুড পয়জনিং, শ্বাসকষ্ট এবং জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন আন্দোলনরত ১৭ জন অস্থায়ী কর্মচারী। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে। তবুও আন্দোলনে অটল রয়েছেন তারা।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের নৈশ প্রহরী আলাউদ্দিন বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারনে ফুড পয়জনিং, শ্বাসকষ্ট এবং নানা অসুখে আক্রান্ত হয়েছেন আন্দোলনরত কর্মচারীদের ১৭ জন। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন তারা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে। আন্দোলনে অটল রয়েছি। চাকরি স্থায়ী করার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কেউ এখান থেকে যাবো না।
বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান মেডিক্যাল অফিসার ডা. শামছুর রহমান বলেন, গত কয়েকদিনে আন্দোলনরত কয়েকজন কর্মচারী চিকিৎসা নিতে এসেছে।মোট কতজন এসেছে তা আমি বলতে পারবো না।
এ বিষয়ে জানতে ভিসি অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।