লোকেশ রাহুল ও দীপক হুডার ফিফটিতে ভর করে চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস। এরপর বল হাতে পেসার আভেশ খান ও অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডারের ঝলকে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ পাঁচে উঠলো নবাগত এই দলটি। চলতি আইপিএলের দ্বাদশ ম্যাচে সোমবার মুম্বাইয়ের ডি ওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে ১২ রানের জয় পেয়েছে লক্ষ্ণৌ। শুরুতে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানের সংগ্রহ পায় লক্ষ্ণৌ। জবাবে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান তুলতে পারে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে হায়দরাবাদের শুরুটা হয় নড়বড়ে। দুই ওপেনার কেন উইলিয়ামসন (১৬) ও অভিষেক শর্মা (১৩) বিদায় নেন দলীয় ৩৮ রানের মধ্যেই। দুজনই ভারতীয় পেসার আভেশ খানের বলে আউট হয়েছেন। এরপর রাহুল ত্রিপাঠী প্রথমে এইডেন মার্করাম (১২)-কে নিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন। তবে নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ভারতীয় স্পিনার ক্রুনাল পান্ডিয়ার বলে রবি বিষ্ণুইয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৩০ বলের মোকাবিলায় ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪৪ রান করেন ত্রিপাঠী।
দলীয় ৯৫ রানে ৪ উইকেট হারানো হায়দরাবাদ এরপর ঘুরে দাঁড়ায় নিকোলাস পুরান ও ওয়াশিংটন সুন্দরের ব্যাটে। দুজনে মিলে যোগ করেন ৪৮ রান। কিন্তু ইনিংসের ১৮তম ওভারে দারুণ খেলতে থাকা পুরানকে বিদায় করে লক্ষ্ণৌকে ফের সঠিক পথে ফেরান আভেশ। একই ওভারের পরের বলেই আব্দুল সামাদের উইকেটও তুলে নেন তিনি।
শেষ ১২ বলে হায়দরাবাদের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৬ রান। ক্রিজে দলটির ভরসা তখন এর আগে বল হাতে আলো ছড়ানো সুন্দর ও শেফার্ড। দুই লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটার মিলে ১৯তম ওভারে ১ ছক্কাসহ তুলতে পারেন ১০ রান। ফলে শেষ ওভারে ১৬ রান করতে হতো হায়দরাবাদকে। ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডারের করা ওই ওভারের প্রথম বলেই ক্যাচ আউট হয়ে বিদায় নেন সুন্দর (১৮)। এরপর নয়ে নামা ভুবনেশ্বরকে (১) ওভারের চতুর্থ বলে ফেরান হোল্ডার। আর শেষ বলে তার শিকার হন শেফার্ড (৮)। অর্থাৎ ইনিংসের শেষ ওভারে মাত্র ৩ রান খরচে ৩ উইকেট তুলে নিয়েছেন হোল্ডার।
বল হাতে ৪ ওভারে ২৪ রান খরচে আভেশ ৪টি উইকেট তুলে নিয়েছেন। এছারা হোল্ডার ৩টি ও ক্রুনাল ২টি উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন। এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে দলীয় ২৭ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে লক্ষ্ণৌ। এর মধ্যে দুই বিদেশি কুইন্টন ডি কক (১) ও এভিন লুইস (১) ফেরেন ভারতীয় স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দরের শিকার হয়ে। আর মনিশ পান্ডে ১১ রান করে ক্যারিবীয় পেসার রোমারিও শেফার্ডের বলে ভুবনেশ্বর কুমারের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন।
শুরুর বিপর্যয়ের পর ৮৭ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন ওপেনার ও অধিনায়ক লোকেশ রাহুল ও মিডল অর্ডার ব্যাটার দীপক হুডা। দুজনেই পেয়ে যান ফিফটির দেখা। দীপক ৩৩ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় ৫১ রান করে শেফার্ডের দ্বিতীয় শিকারের পরিণত হন। তবে রাহুল থামেন ৬৮ রান করে। ৫০ বল স্থায়ী ইনিংসটি ৬টি চার ও ১ ছক্কায় সাজানো। এছারা শেষদিকে শেফার্ডের নৈপুণ্যে রান আউট হওয়ার আগে আয়ুশ বাদোনি ১২ বলে ১৯ রান করেন।
বল হাতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের সুন্দর, শেফার্ড ও নটরাজন ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন আভেশ খান। এই নিয়ে ৩ ম্যাচে ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার পাঁচে উঠে এলো লক্ষ্ণৌ। সমান পয়েন্ট শীর্ষ চারে থাকা দলগুলোরও। তবে নেট রান রেটে তাদের চেয়ে পিছিয়ে রাহুলবাহিনী। অন্যদিকে ২ ম্যাচ খেলে এখনও জয়ের মুখ না দেখা হায়দরাবাদ আছে টেবিলের তলানিতে।