‘প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন’ এমন অভিযোগে দেশের প্রায় তিন হাজার গেজেটধারী বীর মুক্তিযোদ্ধার মাসিক সম্মানি ভাতা স্থগিত রয়েছে। ভুক্তভোগী এসব মুক্তিযোদ্ধা এর বিরুদ্ধে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) কাছে আপিল করেছেন। আপিল শুনানিতে অভিযোগ প্রমাণিত না-হওয়ায় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগের ১৬২ জনের ভাতা আবারও চালুর সুপারিশ করেছে জামুকা। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সারা দেশের কিছু গেজেটধারী মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধেও লিখিত অভিযোগ এসেছিল যে তারা ‘অমুক্তিযোদ্ধা’। এসব অভিযোগ যাচাই-বাছাই করতে সংশ্লিষ্ট উপজেলায় পাঠানো হয়। ওইসব ব্যক্তি যাচাই-বাছাই কমিটির সামনে নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার সপক্ষে প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হয়। ফলে কমিটি তাদের মাসিক সম্মানি ভাতা বন্ধ করে সনদ বাতিলের সুপারিশ করেছে।
সে অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের ভাতা বন্ধ রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে যারা আপিল আবেদন করেছেন, তাদের আবারও শুনানি হয়েছে। আপিল কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে জামুকা ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। জানা গেছে, এ ধাপে তিন বিভাগে জামুকার সদস্যদের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানি ভাতা বন্ধের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি হয়। মোট ৩৩৫টি শুনানির বিপরীতে ১৪৭ জন অনুপস্থিত থাকেন ও ২৬ জন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন বলে প্রমাণিত হয়। বাকি ১৬২টি জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না-হওয়ায় তাদের ভাতা চালুর সুপারিশ করে জামুকা। এর আগে প্রথম ধাপে ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের এক হাজার ৭৬৪ জনের শুনানি সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সপক্ষে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত হাজির করায় এক হাজার ৩৫ জনের ভাতা চালুর সিদ্ধান্ত দেয় সংশ্লিষ্ট আপিল শুনানি কমিটি।
সূত্র জানায়, ভাতা চালুর সুপারিশপ্রাপ্তদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৩৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০৭ ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১৮ জন রয়েছেন। ঢাকার সুপারিশপ্রাপ্তরা হলেন : কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার মৃত মহরম আলী, মৃত সামসুদ্দিন, নুরুল ইসলাম, আ. বারিক, শহীদ উল্লাহ, আ. রশিদ, হাবীবুর রহমান, মুর্শিদ আলী, মৃত আব্বাস আলী, আবদুর রহিম, আ. মালেক, আবু মিয়া, বছির উদ্দিন, কারার বোরহান উদ্দিন, আ. হাশিম, মৃত আবু বকর, মৃত আবু মুসা, মৃত মো. আলাউদ্দিন এবং আবু সাঈদ ইমাম। কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার মৃত নজরুল ইসলাম ভুইয়া, কটিয়াদী উপজেলার আ. হামিদ ভূঞা ও মৃত বজলুর রহমান খান। একই জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার সিদ্দিক হোসেন ও পীর মামুদ, কুলিয়াচরের মৃত মকসুদ আলী ও কালা মিয়া এবং বাজিতপুরের মৃত জিয়া উদ্দিন আহম্মদের ভাতাও চালুর সুপারিশ করা হয়েছে।
এ ছাড়া নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আবদুস সাত্তার, শিবপুরের মৃত আবদুর রব মৃধা, গাজীপুর কালিয়াকৈরের মোয়াজ্জেম হোসেন, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার শাহ নেওয়াজ, আ. আউয়াল, সখীপুর উপজেলার আলম মিয়া, ফজলুল হক, হাসেন আলী মিয়া, লেবু মিয়া এবং মো. শাহজাহান মিয়ার ভাতাও চালুর সুপারিশ করেছে জামুকা।
চট্টগ্রামের সুপারিশ প্রাপ্তরা হলেন : কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার নিখিল চন্দ্র দাস, প্রফুল্ল চন্দ্র পাল, আবদুল খালেক, জাহাঙ্গীর কবির ভুঁইয়া, আবদুল হাকিম শেখ, আবদুর রশিদ, মৃত কালিপদ কর, জয়নাল আবেদিন, আ. খালেক, মনিরুল ইসলাম, মোহাম্মদ আবদুল হামিদ, হরি মোহন দাস, মিজানুর রহমান ও মোহর আলী। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মৃত মো. এনামুল হক, হাবিবুর রহমান, মমতাজ উদ্দিন, আবদুল মতিন, মো. সিদ্দিক, তনু মিয়া, সফিক উল্লা, এরশাদ আলী, কাজী আবু রশিদ, মৃত মুন্সী মিয়া, মৃত এএইচএম রুস্তম আলী, মৃত হাফেজ আহম্মদ, মৃত আবদুল শুক্কুর পাটোয়ারী, মৃত মকবুল আহম্মদ, ছাদেক হোসেন, ফয়েজ আহম্মদ, মৃত হাবিবুর রহমান, ইদ্রিস মজুমদার, আবুল কালাম ভূঞা, মৃত আবদুর রশিদ চৌধুরী, মকবুল আহম্মদ ভূঞা, সিরাজুল হক, মৃত ছমেদ আলী, রুহুল আমিন ভুঁইয়া, মৃত সৈয়দ আহম্মদ মজুমদার, আবু নছর ভুঁইয়া, মৃত ফজলুল হক, ছালেহ আহম্মদ ভুঁইয়া, মৃত মজিবুল হক মিয়াধন এবং অহিদুর রহমান খান। হোমনা উপজেলার মৃত রফিকুল ইসলাম, বুড়িচং উপজেলার আবদুর রাজ্জাক, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার রেনু মিয়া ও আবু তাহের ভুঁইয়া, চান্দিনা উপজেলার শরীফুল ইসলাম, মুরাদনগর উপজেলার আবদুস সাত্তার, মেঘনা উপজেলার মিজানুর রহমান, মৃত মজিবুর রহমান ও মৃত সামসুল হক।
চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার মৃত একেএম মুসলিম, মৃত আবদুস ছোবহান তালুকদার, সিরাজুল ইসলাম, আবদুল খালেক, মৃত মোকলেছুর রহমান, হাসান রাজা পাটোয়ারী ও সিরাজুল ইসলাম। মতলব দক্ষিণের মৃত আবদুল মান্নান ও আবদুর রশিদ মিয়া, মতলব উত্তরের আবদুল মান্নান ও বোরহান উদ্দিন এবং হাইমচরের ডা. আবদুল বাতেন। নোয়াখালী সদর উপজেলার সামছুল হক, নুরুল ইসলাম ও রেজাউল হক খন্দকার, সেনবাগের গোলাম মোস্তফা এবং লক্ষ্মীপুর সদরের মৃত তোফায়েল আহম্মদ পাটোয়ারী।
ফেনী সদরের মুলকুত মিয়া ও শাহজাহান, পরশুরাম উপজেলার মৃত লুৎফর হায়দার, খলিলুর রহমান, বাহার উদ্দিন ভুঁইয়া, মৃত মাজহারুল করিম, নুর মোহাম্মদ মজুমদার ও শহিদ উল্লাহ। ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার রবিউল হক, ইদ্রিস, মনির আহম্মদ মজুমদার, আমিনুল হক, মোহাম্মদ মোস্তফা পাটোয়ারী, আবুল কাশেম মজুমদার, সাহাব উদ্দিন, মৃত আজিজুল হক, মৃত আবদুল হামিদ চৌধুরী, খোরশেদ আলম, মো. কামাল উদ্দিন (এস আজিম), ওবায়দুল হক, আবদুল রউফ, মাহবুবুল করিম, দাগনভূঞা উপজেলার বাবুল মিঞা, মৃত ছালামত উল্যাহ, মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুর কুদ্দুস, আহসান উল্যা, মৃত একেএমজেড হোসেন এবং রাঙামাটি সদরের আনোয়ার হোসেন মিয়া। কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার মৃত জহিরুল ইসলাম চৌধুরী, মৃত মোহাম্মদ ফাজেল, মৃত মোজাম্মেল, মৃত নুরুল আলম মাস্টার, মৃত হাফেজ আহম্মদ, মহেশখালী উপজেলার মোহাম্মদ ফিরোজ খান, নাজির আহম্মেদ এবং মৃত আক্যমং।
ময়মনসিংহ জেলার সদর উপজেলা মৃত রফিজ উদ্দিন, ডা. দীপক কুমার নন্দী, মুক্তাগাছা উপজেলার আতাউর রহমান, ত্রিশালের নুরুল ইসলাম, মৃত আ. ছোবহান, ভালুকা উপজেলার মৃত আ. হালিম মাস্টার, গফরগাঁও উপজেলার আ. লতিফ, ফুলবাড়িয়ার মৃত এজেডএম শফিকুল ইসলাম ও মৃত সোলায়মান। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার ছিদ্দিকুর রহমান, মোহনগঞ্জ উপজেলার শাহজাহান মিয়া, লালা হরিজন, নুরুল আমিন আকন্দ। শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার মো. সাব্দুল, মৃত ইদ্রিস আলী, আবু বক্কর, জামালপুর সদরের মৃত ইমান উদ্দিন এবং ইসলামপুর উপজেলার মোসাহাব আলী।