২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলে আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আবরারকে হত্যা করার অভিযোগে ২৫ জন বুয়েট শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়। ঘটনার পর আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ চকবাজার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়, যেখানে বলা হয়, আবরারকে ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর, ঢাকা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে এবং ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর আদালত ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং আরও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয় ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি। এ সময়, ডেথ রেফারেন্সসহ অন্যান্য নথিপত্র হাইকোর্টে পাঠানো হয়। ফৌজদারি আইনে, যখন কোনো আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, তখন হাইকোর্টের অনুমোদন প্রয়োজন হয়, যা ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পরিচিত। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, দণ্ডিত ব্যক্তিরা নিজেদের দণ্ডের বিরুদ্ধে জেল আপিল এবং নিয়মিত আপিল করে হাইকোর্টে।
এ মামলার শুনানি শুরু হয় ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে, যেখানে হাইকোর্ট আসামিদের আপিল গ্রহণ করে। এরপর মামলার পেপারবুক থেকে উপস্থাপন করে ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর পুনরায় শুনানি শুরু হয়। গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে নিয়মিত শুনানি চলতে থাকে এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।
আজ, ১৬ মার্চ, হাইকোর্ট ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় বহাল রেখেছেন।
এই মামলায় ২০ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মধ্যে অন্যতম হলেন, বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার অপু, সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন সহ আরও অনেকে।
এছাড়া, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ৫ আসামির মধ্যে রয়েছেন বুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা, এবং সদস্য আকাশ হোসেন ও মোয়াজ আবু হোরায়রা।
এ মামলার পটভূমি অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ চকবাজার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মাত্র ৩৭ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষে ১৩ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করা হয়।
এরপর, ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ আদালত ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। মামলার ডেথ রেফারেন্স ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে পাঠানো হয়।l