আফগানিস্তানের পানশির উপত্যকার ১০ এতিম শিশুর আশ্রয় হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানে দিব্যি নাচ, গান আর খেলাধুলায় মেতে আছে শিশুরা। গত সপ্তাহে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পাকিস্তান পৌঁছে তারা। সেখান থেকে বিমান যোগে পৌঁছেছে অস্ট্রেলিয়ায়। বর্তমানে ব্রিসবেনের একটি হোটেলে ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইনে আছে শিশুরা।
এসব শিশুদের কারও বাবা নেই, কারও মা নেই। কারও আবার পরিচয় দেয়ার মতো কেউই নেই। এসব শিশুর অধিকার রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে পানশির উপত্যকায় একটি এতিমখানা গড়ে তোলেন অস্ট্রেলিয়ান এই নারী। সেখানকার পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হওয়ায় তার প্রতিষ্ঠানের বাচ্চাদের অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে যান তিনি। কোয়ারেন্টাইন শর্ত মানতে এখন বাচ্চাদের রাখা হয়েছে হোটেলে। ১০ দিন পার হলেই ফিরবে বাসায়।
ওই প্রতিষ্ঠানটির নাম মাহবুবা’স প্রমিস। প্রতিষ্ঠাতা মাহবুবা রাভি বলেন, খুবই দরিদ্র পরিবার থেকে এসেছে এরা। বেশিরভাগের বাড়িতে খাওয়া-পরার ব্যবস্থা নেই। এমনকি একটি শিশুকে দেখিয়ে তিনি বলেন, বাধ্য হয়ে এই শিশুটিকে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলো তার পরিবার। আমি তাদেরকে বুঝিয়ে এতিমখানায় নিয়ে যাই। মাহবুবা নামের এই নারী জানান, ৮০র দশকে আফগানিস্তানে বসবাস শুরু করেন তিনি। ১৯৯২ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তার ৬ বছর বয়সী ছেলের। এর পরই সন্তানের স্মরণে চালু করেন এতিমখানা। সেখানেই আশ্রয় হয় বাচ্চাগুলোর।
মাহবুবা বলেন, আমার এই প্রতিষ্ঠানটি কোনো এনজিও কিংবা দাতব্য সংস্থা নয়। আমি শুধু অসহায় শিশুদের সহায়তা করছি। অন্য দাতব্য সংস্থাগুলোর সাথে আমার প্রতিষ্ঠানের পার্থক্য, আমি এতিম এসব শিশুর মায়ের অভাব পূরণ করছি। ওদের মুখ দেখলেই আমার সন্তানের কথা মনে পড়ে, বলেন তিনি। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়াতে থাকা, খাওয়া, বিনোদন, চিকিৎসা, শিক্ষা কোনো কিছুরই অভাব নেই। যে কোনো শিশুর জন্যই নিরাপদ আবাসস্থল অস্ট্রেলিয়া। তাই পানশিরে এখনও যেসব সুবিধাবঞ্চিত শিশু রয়েছে তাদেরকে আস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এই নারী।