যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্লেষণ ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গ্যালাপের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে দুঃখী দেশ হলো আফগানিস্তান। মার্কিন এ প্রতিষ্ঠানটির একটি জরিপে উঠে এসেছে ৯৮ শতাংশ আফগানই সুখী নয়। তারা কোনো না কোনো কারণে হতাশায় ভোগেন।
সুবিশাল ও প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ আফগানিস্তানের মানুষ কেন সুখী নয়— সে বিষয়ে বুধবার (১২ জুলাই) টুইটার স্পেসে একটি অনলাইন আলোচনার আয়োজন করে আফগান বার্তাসংস্থা খামা প্রেস।
এই আলোচনায় আফগানিস্তানের আইনজীবী ইউনিয়নের ডেপুটি আবদুল সুবহান মিসবাহ বলেছেন, ‘বর্তমান যে পরিস্থিতি দেশটিতে বিরাজ করছে; তা কোনো প্রতিবেদন বা জরিপ ছাড়াই বলা যায়। আফগানিস্তানে এখন কোনো সংবিধান নেই। আর যখন সমস্যাবলী সংবিধান ছাড়া সমাধান করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে কোনো সন্দেহ নেই জীবন নিয়ে মানুষের সন্তুষ্টি এবং সুখের মাত্রা কম হবে।’
তিনি আরও জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে আগে থেকেই সমস্যা ছিল। কিন্তু দুই বছর আগে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। বর্তমানে সাধারণ আফগানরা কাজ, শিক্ষা ও বাক স্বাধীনতার মতো বিভিন্ন মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যা নাগরিক জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।
এই আলোচনায় দ্বিতীয় বক্তা হিসেবে কথা বলেন পার্পল সেটারডে আন্দোলনের প্রধান মরিয়ম মারুফ আরভিন। তিনি বলেছেন, ‘গত ২০ বছর ধরেই আফগানদের নিত্য সঙ্গী অনিরাপত্তা, বেকারত্ব এবং অর্থনৈতিক মন্দা। তবে দুই বছর আগে তালেবানের শাসন শুরুর পর আশা ও আকাঙ্খা এখন বিরল জিনিসে পরিণত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘মানুষ এসব সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। কিন্তু গত দুই বছর ধরে এ লড়াইয়ের আকাঙ্খাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’
এই অধিকারকর্মী আরও বলেছেন, ‘যখন আপনার কাছ থেকে নিজস্বতা কেড়ে নেওয়া হয়, তখন আপনাকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে মূল্যায়ন করা হবে। এরপর আপনার স্কুলে-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া, কাজ করার এবং খেলাধুলার মতো মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে। আপনার সরকারের মন্ত্রণালয়ে ছোট কোনো (নারীদের) অংশও থাকবে না। সিদ্ধান্ত নেওয়ায় যুক্ত করা হবে না। আর যারা ক্ষমতায় আছে তারা নারীদের পুরষদের ফার্ম হিসেবে অভিহিত করে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে, কীভাবে সম্ভব দুঃখী না হয়ে?’