ভারতে অনুপ্রবেশের মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ২০১৮ সালের নিম্ন আদালত থেকে খালাস পেলেও দেশটির সরকার আপিল করায় এতদিন দেশে ফেরার সুযোগ পাননি। লম্বা সময় পর গতকাল মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে করা মামলা থেকে বেকসুর খালাস দিয়ে রায় দিয়েছেন দেশটির মেঘালয় রাজ্যের শিলং জজ আদালতের আপিল বিভাগ। ফলে তার দেশে ফেরার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।
শিগগিরই তিনি দেশে ফিরবেন বলে বুধবার (১ মার্চ) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। বলেন, আমি নিশ্চিত হয়ে বলছি, দেশটির মেঘালয় রাজ্যের শিলং জজ আদালতের আপিল বিভাগ গতকাল মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ এর আগে ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর নিম্ন আদালতের রায়ে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে করা মামলা থেকে বেকসুর খালাস পান। কিন্তু ভারত সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। এর ফলে তিনি আর তখন দেশে ফিরতে পারেননি। এর দীর্ঘ চার বছর পর নিম্ন আদালতের ওই রায় বহাল রেখে ভারত সরকারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সালাহউদ্দিন আহমেদকে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন জজ আদালত।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন সালাহউদ্দিন আহমেদ। নিখোঁজের ৬৩ দিন পর ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ সালাহউদ্দিনকে উদ্ধারের পর সেখানকার একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করায়। এর পরদিন তাকে শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী সালাউদ্দিনকে গ্রেফতার দেখায় মেঘালয় থানা পুলিশ। একই বছরের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযোগ গঠন করা হয়।
১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন সালাউদ্দিন। এরপর প্রশাসনের চাকরি ছেড়ে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন। ২০০১ সালে তিনি কক্সবাজার থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিএনপি ক্ষমতায় এলে তিনি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী হন।
ভারতে আটকের সময় সালাহউদ্দিন আহমেদ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। ভারতে আটক অবস্থায় বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিলে তিনি দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হন।
এদিকে চূড়ান্ত রায়ে খালাস পাওয়ার পর গণমাধ্যমকে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর নিম্ন আদালত খালাস দিয়েছিলেন। পরে সেই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করে। শিলংয়ের জজ কোর্ট গতকাল মঙ্গলবার আবারও আমাকে বেকসুর খালাস দিয়ে মামলা নিষ্পত্তি করতে আদেশ দিয়েছেন। দ্রুত যেন আমাকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দেশে ফেরার বিষয়ে তিনি বলেন, যত শিগগিরই সম্ভব দেশে ফিরতে চাই।