বিএনপি তাদের আন্দোলন জমাতে উসকানি দিয়ে লাশ ফেলতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। তারা উসকানি দিয়ে লাশ ফেলতে চাইলে সরকার দায়ী থাকবে না। তাদের উদ্দেশ্য সফল হতে দেব না। ২০১৩-১৪’র মতো সহিংসতা করতে চাইলে তার সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না। এই মন্ত্রণালয়ের কোথাও দুর্নীতিবাজ থাকতে পারবে না। এদের চিহ্নিত করতে হবে এবং ব্যবস্থা নিতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করুক, কেন তদন্ত করে না। যেখানে দুর্নীতি হয় সেখানে তদন্ত করতেই হবে। আমি সবাইকে বলছি, কাজ করুন। দুর্ঘটনা-যানজট কমান।
তিনি বলেন, আইন করেছি ৩ চাকার গাড়ি মহাসড়কে চলবে না, কিন্তু কে শোনে কার কথা। আমি এক পথে যাই, খবর পাই, তখন সব ক্লিন। আবার আমি যখন রাস্তা অতিক্রম করি, আবার সেই পুরনো চিত্র।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনার সংখ্যা আগের চেয়ে কমলেও দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার আগের চেয়ে বাড়ছে। এটা বাস্তবতা, অস্বীকার করে লাভ নেই। আজ এতো স্থাপনা সারা বাংলাদেশে, এতো আন্ডার পাস, ওভার পাস, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, টানেল সবই হচ্ছে। তারপরও শৃঙ্খলা কেন নেই? শৃঙ্খলা না থাকলে সাফল্য ম্লান হয়ে যাবে। উন্নয়নের অবকাঠামো, এত সাফল্য সব ম্লান হয়ে যাবে যদি আমরা সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষা করতে না পারি।
জনপ্রতিনিধিদের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাস্তায় ৩ চাকার গাড়ি বন্ধ করেছি। আমি যখন খবর নিই, বলে যে, অমুক জনপ্রতিনিধি গাড়ি চলতে দিয়েছেন। কেন চলবে? তার কোনো স্বার্থ আছে। জীবন আগে না জীবিকা আগে? জীবন তো বাঁচাতে হবে। জীবন না বাঁচলে জীবিকা দিয়ে কী হবে? আমি বুকে হাত দিয়ে বলব, ৫ বছর আগে ছিলাম প্রতিমন্ত্রী, এবার ১১ বছর হয়ে গেল। কোনো পারসেন্টেজ, কোনো কমিশন কখনো নিইনি।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, রাস্তা করি, বৃষ্টি হলে রাস্তা নেই, টাকা কোথায় যায়? এ টাকা সরকারের টাকা, জনগণের ট্যাক্সের টাকা। সচিব সাহেব, এই মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতিবাজ থাকবে না, দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করুক।যেখানে দুর্নীতি হয়, সেখানে তদন্ত করতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার মতো সৎ নেতা চাই। তার মতো সততা, ভালো মানুষ পঁচাত্তরের পরে একজনও আসেনি। কয়জন জনপ্রতিনিধি জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন, কয়জন পকেটের উন্নয়ন করেন সে হিসাব দিতে হবে। শেখ হাসিনা নিজে সৎ থাকবেন, অন্যরা পকেটের উন্নয়ন করবে সেটা হবে না।
তিনি বলেন, গতবারের প্রত্যাশা ছিল দুর্ঘটনা, যানজট ও মোটরসাইকেলের উপদ্রব কমানোর। এই ঢাকা শহরে এখন আর হেলমেট ছাড়া কোনো যাত্রী দেখি না, রাস্তায় যারা হেলমেট ছাড়া চলে তারা পলিটিকাল লোক। পলিটিক্স ঠিক না হলে কিছু ঠিক হবে না।
রাজনীতিবিদদের উদ্দেশে সেতুমন্ত্রী বলেন, মানুষের অসুবিধা করে রং সাইডে যাবেন, আপনি কী নেতা, কেমন রাজনীতিবিদ? আপনাদের দিয়ে জনগণের কী কাজে আসবে?’
তিনি বলেন, শৃঙ্খলা না থাকলে সাফল্য ম্লান হয়ে যাবে। সড়কে শৃঙ্খলা আনতে হবে। আগের সচিবকেও বলেছি, এদের নিয়মের মধ্যে আনতে হবে। নীতিমালা করলে হবে না, নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম খারাপ হতে চলেছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গা, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী ও নিরাপদ সড়ক চাই-এর সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।