আবাসন খাতের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘রিহ্যাব ফেয়ার’ শুরু হয়েছে বুধবার থেকে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পাঁচ দিনব্যাপী চলা এ মেলার পর্দা নামছে রোববার (২৫ ডিসেম্বর)।
মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চালু থাকার কথা। তবে আজ মেট্রোরেল উদ্বোধন ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজের সুবিধার্থে মেলা নির্ধারিত সময়ের ৭ ঘণ্টা আগেই শেষ হবে। অর্থাৎ রোববার মেলা চলবে দুপুর ২টা পর্যন্ত।
এবারের মেলায় শুরু থেকেই নানা ছাড়-উপহার আর অফার নিয়ে হাজির হয়েছিল আবাসন খাতের কোম্পানিগুলো। অন্যান্যবারের মতো এবারও ছোট ও মাঝারি আকারের ফ্ল্যাটের চাহিদা ছিল বেশি।
তবে দেশের প্রথম মেট্রোরেল উদ্বোধন হচ্ছে আগামী ২৮ ডিসেম্বর। এজন্য মিরপুর-উত্তরার যাতায়াত ব্যবস্থা খুব সহজ হবে। আর এ কারণে এবারের আবাসন মেলায় মিরপুর-উত্তরা অংশে ফ্ল্যাটের চাহিদা বেশি ছিল।
এর আগে গত ২০২১ সালের পাঁচ দিনব্যাপী রিহ্যাব শীতকালীন আবাসন মেলায় প্রায় ৪০০ কোটি টাকার বুকিং দিয়েছিলেন ক্রেতারা। মেলায় গৃহঋণ সংক্রান্ত ব্যাংক কমিটমেন্ট এসেছিল প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। এ বছরও ভালো ব্যবসা করেছে আবাসন খাতের কোম্পানিগুলো এমনটাই জানিয়েছেন আবাসন ব্যবসায়ীরা।
রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন (কাজল) বলেন, আবাসন খাতের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘রিহ্যাব ফেয়ার ২০২২’ ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে ২২ বছর ধরে আয়োজন হচ্ছে।
তবে সম্প্রতি নির্মাণ সামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে ফ্ল্যাটের দাম বেড়েছে। সামনে আরও বাড়তে পারে। রিহ্যাব আয়োজিত এই বছরের ফেয়ার ছিল ক্রেতাদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ। কারণ এখনও বিভিন্ন কোম্পানি আগে থেকে শুরু করা প্রকল্পগুলোতে তুলনামূলক বিশেষ দামে এ বছর ফ্ল্যাট দিতে পেরেছেন।
অনেক কোম্পানি চলতি মাসের পুরো সময়টাতেই ছাড় দেবে! আগামীতে বিভিন্ন কারণে সেই সুযোগ কমে আসবে। গত আয়োজনের ধারাবাহিকতায় এবারও একটি সফল ফেয়ার আমরা উপহার দিতে পেরেছি।
রিহ্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০০১ সাল থেকে ঢাকায় রিহ্যাব হাউজিং ফেয়ার শুরু হয়। এছাড়া চট্টগ্রামে ১৪ টি ফেয়ার সফলভাবে সম্পন্ন করেছে রিহ্যাব। রিহ্যাব ২০০৪ সাল থেকে বিদেশে হাউজিং ফেয়ার আয়োজন করে আসছে। এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১২টি, যুক্তরাজ্যে, দুবাই, ইতালির রোম, কানাডা, সিডনি, কাতারে ১টি করে এবং দুবাইতে ২টি ‘রিহ্যাব হাউজিং ফেয়ার’ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
এসব ফেয়ার আয়োজনের মাধ্যমে রিহ্যাব দেশে ও বিদেশে গৃহায়ন শিল্পের বাজার সৃষ্টি এবং তা প্রসারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখছে। অন্যদিকে প্রবাসী ক্রেতারা যেমন দেশে তাদের পছন্দের আবাসন খুঁজে পেয়েছে আবার এই ফেয়ারের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি গৃহায়ন শিল্প এবং লিংকেজ শিল্প বিকাশে অনন্য ভূমিকা পালন করে চলেছে।
এবারের ফেয়ারে ১৮০টি স্টল অংশ নিয়েছিল। ফেয়ারে ৩টি ডায়মন্ড প্যাভিলিয়ন, ৭টি গোল্ড স্পন্সর, ২২টি কো-স্পন্সর, ১৬টি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও ১৩ অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠানকে অংশগ্রহণ করে। রিহ্যাব ফেয়ার ২০২২ এ ডায়মন্ড স্পন্সর হিসেবে ছিল রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেড, রূপায়ন রিয়েল এস্টেট লিঃ এবং আরএকে সিরামিকস (বাংলাদেশ) লিঃ।
গোল্ড স্পন্সর হিসেবে রয়েছে কনকর্ড রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডিং প্রডাক্ট লিঃ, ক্রিডেন্স হাউজিং লিঃ,ডোম-ইনো বিল্ডার্স লিঃ, ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট (প্রাইভেট) লিঃ, নাভানা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড, র্যাংস প্রপার্টিজ লিঃ, শেলটেক প্রাইভেট লিঃ। এছাড়া কো-স্পন্সর হিসাবে অংশগ্রহণ করেছে সর্বমোট ২২টি প্রতিষ্ঠান।