রেলে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩৭ জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চলছিল। আজ যুক্ত হচ্ছে আরও ২০ জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন। এ নিয়ে আজ থেকে মোট ৫৭ জোড়া অর্থাৎ ১১৪টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে। রেলপথ মন্ত্রণালয় জানায়, ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি করলেও যাত্রীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রায় ৯০ শতাংশ স্টেশন উন্মুক্ত থাকায় চলন্ত কিংবা দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে বিনা টিকিটে যাত্রীরা উঠে পড়ছে। করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধিও উপেক্ষিত হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্টেশনে অভিযান পরিচালনা হচ্ছে। এতে শত শত বিনা টিকিটে অবৈধ যাত্রী আটক হচ্ছে। জরিমানা আদায় করে তাদের ছেড়ে দিতে হচ্ছে। ট্রেনের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে বিনা টিকিটের যাত্রীর সংখ্যাও বাড়বে-এমনটা বলছেন মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। তাদের বক্তব্য, ট্রেনে যাত্রী চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এ অবস্থায় আসন সংখ্যার অর্ধেক টিকিট বিক্রি ও সিটবিহীন টিকিট না বিক্রি করায় যাত্রীরা ট্রেনে উঠে পড়ছে।
পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম জানান, আজ থেকে পূর্বাঞ্চল রেলে ৪ জোড়া আন্তঃনগর এবং ৭ জোড়া মেইল ও কমিউটার ট্রেন চলবে। আন্তঃনগর ট্রেনগুলো হলো-অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। মেইল ও কমিউটার ট্রেন হলো-ঢাকা মেইল, সুরমা মেইল, তিতাস কমিউটার, দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার, ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস, মহুয়া এক্সপ্রেস। তিতাস কমিউটার চারটিসহ প্রতিটি ট্রেন দুটি করে মোট ২২টি ট্রেন চলবে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা জানান, এ অঞ্চলেও বিনা টকিটে যাত্রীদের আনাগোনা রয়েছে। যে কোনো ট্রেনেই তারা টিকিটবিহীন উঠে পড়ে। করোনার এ সময়ে ঝুঁকি নিয়েই তাদের আটক করা হচ্ছে। কিন্তু পুরোপুরি রোধ করা যাচ্ছে না। চলমান ট্রেনের সঙ্গে নতুন করে এ অঞ্চলে আজ থেকে আরও ২০টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে। আন্তঃনগর ট্রেনগুলো হচ্ছে, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস, সীমান্ত এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, বাংলাবন্দর এক্সপ্রেস। মেইল ও কমিউটার ট্রেনগুলো হচ্ছে-বিরল কমিউটার, বগুড়া এক্সপ্রেস, রাজবাড়ী এক্সপ্রেস, কলেজ ট্রেন। ৪টি রাজবাড়ী এক্সপ্রেসসহ বাকিগুলো দুটি করে চলবে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রোধে ৫ এপ্রিল সরকার লকডাউনের বিধিনিষেধ আরোপ করলে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সরকার বিধিনিষেধ শিথিল করলে ২৪ মে থেকে ট্রেন চালানোর ঘোষণা দেয় রেলওয়ে। প্রাথমিকভাবে সারা দেশে ২৮ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন, ৯টি মেইল এক্সপ্রেস ও কমিউটার ট্রেন চলাচল শুরু হয়। আজ যুক্ত হচ্ছে আরও ২০ জোড়া। এসব ট্রেনের অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।
রেলওয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী জানান, কোনো অবস্থাতেই টিকিটবিহীন কোনো লোককে রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশ ও ট্রেনে উঠতে দেওয়া হবে না। যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিটি ট্রেনে, স্টেশনে জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। একই সঙ্গে সুরক্ষাসামগ্রী যাত্রীদেরও বহন করতে বলা হয়েছে।