আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুব মহাসমাবেশে সকলের উদ্দেশ্যে বিশেষ বার্তা দেবেন। সেই বার্তা শোনার জন্যই মানুষের ঢল নামবে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। এটি হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় যুব মহাসমাবেশ। শুক্রবার থেকে রাজপথ যুবলীগের নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলেও তিনি জানান।
দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম ও হাজারো নেতাকর্মীর আত্মত্যাগের মাধ্যমে যুবলীগ আজ দেশের সর্ববৃহৎ যুব সংগঠনে পরিণত হয়েছে। জিয়াউর রহমান-এরশাদ-খালেদা জিয়ার শাসনামলে অকুতোভয়ে সংগ্রাম করেছে, নির্যাতিত হয়েছেন যুবলীগের নেতাকর্মীরা। বিতর্কের মুখে ২০১৯ সালে যুবলীগে সংস্কার আনেন শেখ হাসিনা। যুবলীগ থেকে অব্যাহতি পান বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতা। একই বছরের ২৩ নভেম্বর সপ্তম কংগ্রেসে সংস্কার পরবর্তী যুবলীগকে ঢেলে সাজাতে প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ ফজলে শামস পরশকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মাইনুল হোসেন খান নিখিল। নতুন নেতৃত্বে বিতর্কের কালিমা মুছে প্রতিষ্ঠাকালীন আদর্শে ফেরার চেষ্টা করছে যুবলীগ।
জানা গেছে, দ্বাদশ নির্বাচনের আগে এই যুব মহাসমাবেশের মধ্যদিয়ে ১০ লক্ষাধিক নেতাকর্মীর সমাগম ঘটিয়ে সংগঠনটি নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতে চায়। দেশের প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভা থেকে নেতাকর্মীরা যুব মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। মহাসমাবেশ ঘিরে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দুই দিন আগে থেকেই সর্বসাধারণের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘আমরা কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। এ সমাবেশে ১০ থেকে ১২ লাখ লোক অংশ নেবে।’ যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংগঠনের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এমপি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধীরা যেভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, তাতে রাজনৈতিক শক্তি এবং সামর্থ্য প্রদর্শন করা এখন অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুব মহাসমাবেশে দেশবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে দাঁতভাঙা জবাব দেবে যুবলীগ।’
যুবলীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন যারা: প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত যুবলীগের সাতটি জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৭৪ সালের প্রথম জাতীয় কংগ্রেসে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বঙ্গবন্ধুর ভাগনে শেখ ফজলুল হক মনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৭৮ সালে দ্বিতীয় জাতীয় কংগ্রেসে আমির হোসেন আমু, ১৯৮৬ সালের তৃতীয় কংগ্রেসে মোস্তফা মহসীন মন্টু, ১৯৯৬ সালের চতুর্থ কংগ্রেসে শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ২০০৩ সালের পঞ্চম কংগ্রেসে জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং ২০১২ সালে ষষ্ঠ কংগ্রেসে মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
কর্মসূচি: প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যুবলীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ভোর ৬টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। সকাল সাড়ে ৯টায় বনানী কবরস্থানে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহিদ শেখ ফজলুল হক মনিসহ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট নিহত সব শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতেহা পাঠ এবং মোনাজাত।