গাজীপুর শহরের শহীদ স্মৃতি উচ্চবিদ্যালয়ে তিনটি ভোটকেন্দ্র। একেবারে মূল ফটক থেকে বুথ পর্যন্ত ভোটারদের ভিড়। তবে ভোটারের বাইরে নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ও বিভিন্ন কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকেরাও কেন্দ্রে ব্যাজ লাগিয়ে অবাধে ঘোরাঘুরি করছেন।
এ বিদ্যালয়ের একটি কেন্দ্রের ৯টি বুথের মধ্যে ৩টিতে সকালে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) সমস্যা হয়। তবে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, কয়েক মিনিটের মধ্যে টেকনিশিয়ানরা সমস্যার সমাধান করেছেন। যদিও পরে অনেক ভোটারেরই আঙুলের ছাপ না মেলায় ভোট গ্রহণে ধীরগতি দেখা যায়।
তবে এরই মধ্যে ভোটারের লম্বা সারি তৈরি হয়। বুথের সামনে গেট বন্ধ করে দু-চারজন করে ভেতরে ঢোকার সুযোগ দেওয়া হয়। এতে গরমে অনেক সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ভোটারদের। ফজলুল হক নামের এক ভোটার বলেন, দেড় ঘণ্টা ধরে গরমের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন, কিন্তু লাইন এগোয়নি।
খন্দকার সিরাজুল ইসলাম নামের আরেক ভোটার বলেন, বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও তাঁর আঙুলের ছাপ মেলাতে পারছেন না কর্মকর্তারা। তাঁরা বসতে বললেন। এখন থাকবেন নাকি চলে যাবেন, বুঝতে পারছেন না। ভোটারদের লম্বা সারি। সকাল ৯টায় চান্দনা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ ভোটকেন্দ্রছবি: দীপু মালাকার
এ বিদ্যালয়ের একটি কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ৩ হাজার ১৮২। সকাল ১০টা পর্যন্ত ৩৯০টি ভোট পড়েছে। তখন ভোটারের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চান্দনা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ ভোটকেন্দ্র গিয়ে ইভিএমে ধীরগতির চিত্র পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি বুথে গিয়ে দেখা যায়, বাতাসি নামের এক নারী ভোটার দুবার চেষ্টা করেও আঙুলের ছাপ মেলাতে পারেননি। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা তাঁকে ভ্যাসলিন এনে আঙুলে লাগাতে দেন। এরপরও ছাপ মেলেনি। কিন্তু বাতাসির মা নাসিমা প্রথম চেষ্টাতেই সফল হন।
বাতাসি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর হাতের রেখা মুছে গেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এরপর আরও দু-একবার চেষ্টা করবেন। লাইনে দাঁড়ানো অন্য ভোটাররাই বিরক্ত বলে তাঁদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। ওই কেন্দ্রে ৯০ বছর বয়সী আতরজান বিবি ভোট দিতে আসেন দুই ছেলের বউকে নিয়ে। বয়সের ভারে ন্যুব্জ আতরজান বলেন, প্রতি ভোটেই তিনি ভোট দেন। তবে এবার প্রথম ইভিএমে ভোট দিয়েছেন। একটু সমস্যা হয়েছে। অন্যরা দূর থেকে বলে দিয়েছে। নিজের পছন্দের মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলে জানান তিনি।