বিশ্ব অর্থনীতি আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে মন্দার মুখোমুখি হবে। সেন্টার ফর ইকোনমিক্স অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ-এর (সিইবিআর) তথ্যানুসারে, ব্লুমবার্গ তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি মোকাবেলার লক্ষ্যে নতুন ঋণ নেওয়ার খরচ অনেকগুলো দেশের অর্থনীতিকে সংকুচিত করবে। এ কারণে ২০২৩ সালে বিশ্ব একটি অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি হবে।
নিজেদের বার্ষিক ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগ টেবিলে ব্রিটিশ কনসালটেন্সি বলেছে, বিশ্ব অর্থনীতি ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো ১০০ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। কিন্তু, ২০২৩ সালে বিশ্ব অর্থনীতি আবার স্থবির হয়ে যাবে, কারণ নীতি নির্ধারকরা এখন পণ্যের দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে তাদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
সিইবিআর-এর পূর্বাভাস বিভাগের পরিচালক ও প্রধান কে ড্যানিয়েল নিউফেল্ডের মতে, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রতিক্রিয়ায় সুদের হার বৃদ্ধির ফলে বিশ্ব অর্থনীতি আগামী বছর মন্দার সম্মুখীন হবে।”
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধে এখনও জয় পাওয়া যায়নি। আমরা আশা করি ২০২৩ সালে অর্থনৈতিক খরচ সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কাররা তাদের বিকল্প কোনো নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করবেন। মুদ্রাস্ফীতিকে আরও সহনীয় করতে যে খরচ হবে তা আগামী কয়েক বছরের জন্য স্বল্প অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে আসবে।
এ গবেষণার ফলাফলগুলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাম্প্রতিক পূর্বাভাসের চেয়েও হতাশাজনক। বৈশ্বিক এ সংগঠনটি অক্টোবরে সতর্ক করেছিল যে ২০২৩ সালে বিশ্ব অর্থনীতির এক তৃতীয়াংশেরও বেশি সংকুচিত হবে। এছাড়া বিশ্বব্যাপী জিডিপি দুই শতাংশের কম বৃদ্ধির ২৫ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বজুড়ে এমন অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে একটি বৈশ্বিক মন্দা বলে অভিহিত করা হচ্ছে। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এ গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০৩৭ সালে উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলো ধনী অর্থনীতির কাছাকাছি পর্যায়ে চলে যাওয়ার কারণে বিশ্বের মোট দেশজ উৎপাদন দ্বিগুণ হয়ে যাবে। ২০৩৭ সালের মধ্যে ক্ষমতার পরিবর্তনশীল ভারসাম্যের ফলে পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বৈশ্বিক উৎপাদনের মোট এক তৃতীয়াংশেরও বেশি পণ্য উৎপাদিত হবে। একই সময়ে বৈশ্বিক উৎপাদন ব্যবস্থায় ইউরোপের অবদান কমে গিয়ে হবে এক পঞ্চমাংশ।
এ গবেষণা প্রতিবেদনে আইএমএফ-এর ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ থেকে মৌলিক তথ্য নিয়েছে সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ। এছাড়া প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি এবং মুদ্রা বিনিমযয়ের হার সম্পর্কে পূর্বাভাস দিতে একটি অভ্যন্তরীণ মডেল ব্যবহার করেছে।