২০২৬-২৭ অর্থবছরে, এনবিআর থেকে ৬ লাখ ৩১ হাজার ১০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনা রয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৪.১ শতাংশ বেশি। সেইসাথে অন্যান্য উৎস থেকে ৬৪ হাজার ০০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে, যা গত বছরের তুলনায় ৫.৩ শতাংশ বেশি।
বর্তমানে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যার মধ্যে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা এনবিআর থেকে এবং ৬১ হাজার কোটি টাকা অন্যান্য উৎস থেকে আদায় করার লক্ষ্য রয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি নথি অনুযায়ী, সরকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। তিন বছরের মধ্যে রাজস্ব প্রায় ১৩ শতাংশ বেড়ে ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৬ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের আশা করা হচ্ছে।
এনবিআর করের পরিমাণ ২০২৪ অর্থবছরে ২৮.২ শতাংশ বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, এরপর ২০২৫ অর্থবছরে ১৭.১ শতাংশ, ২০২৬ অর্থবছরে ১৫.২ শতাংশ এবং ২০২৭ অর্থবছরে ১৪.১ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
এনবিআরের কর্মকর্তারা বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কর-জিডিপি অনুপাতকে গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে, এবং সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে কর নীতি ও প্রশাসনকে সহজ ও কার্যকর করার জন্য যথাযথ পরিবর্তন ও সংস্কার আনা
এছাড়া, সরকারের কর ছাড়গুলো যাচাই-বাছাই করা হবে এবং সেই অনুযায়ী যৌক্তিক করা হবে। শুল্ক ও আয়কর সম্পর্কিত আইনগুলো আপডেট করা হয়েছে এবং এসব আইন ব্যবসাবান্ধব করতে আরও সংশোধন আনার পরিকল্পনা রয়েছে। এনবিআর বর্তমানে একটি মধ্যমেয়াদি রাজস্ব কৌশল (এমএলটিআরএস) প্রণয়ন করছে, যা আগামী পাঁচ বছরে রাজস্ব আদায়ের পথ তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কর ব্যবস্থায় সংস্কারের পাশাপাশি, সরকার এনটিআর উৎস থেকে রাজস্ব সংগ্রহের সম্ভাবনাও অনুসন্ধান করছে। বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে তাদের লাভের অংশ সরকারকে দেয়, সেই বিষয়ে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এনবিআরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কর বহির্ভূত রাজস্ব খাতে ফি ও হার হালনাগাদ এবং সম্ভাব্য নতুন উৎস চিহ্নিত করা হচ্ছে, যা রাজস্ব সংগ্রহে আরও সহায়ক হবে।
সরকারি সেবা প্রদানের ফি ও চার্জের ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে, যা আগামীদিনে রাজস্ব আদায়ে সাহায্য করবে। পাশাপাশি ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম চালু করা হয়েছে, যাতে জনগণ তাদের ঘরে বসেই সরকারি সেবা গ্রহণ করতে পারেন এবং রাজস্ব সংগ্রহ সহজ হবে।
এদিকে, আয়কর রিটার্নের প্রক্রিয়া সহজ করতে, ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একইভাবে, বড় কিছু বহুজাতিক কোম্পানির কর্মীদের জন্যও অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এনবিআর আয়কর রিটার্ন দাখিল ও পরিশোধের প্রক্রিয়াটি অনলাইনে সহজতর করেছে, এবং ৯ সেপ্টেম্বর থেকে করদাতারা অনলাইনে তাদের রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। ইন্টারনেট ব্যাংকিং, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কর পরিশোধ করা যাচ্ছে এবং রিটার্নের কপি ও আয়কর সনদও অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। ই-রিটার্ন সিস্টেমটি আরও সহজতর করা হয়েছে, যাতে করদাতারা তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে সহজেই নিবন্ধন করতে পারেন। সূত্র: ইউএনবি