আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ বলে আখ্যায়িত করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ এই নেতা বলেছেন, আগামীর নির্বাচন আরেকটা মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের শত্রুদের বিরুদ্ধে আরেকটা মুক্তিযুদ্ধে নামতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা মুক্তিযুদ্ধের পতাকাকে উড্ডয়ন করবো।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক-ছাত্র মিলনায়তন (টিএসসি) মাঠে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতাসহ ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের স্মরণে ওই সভায় আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে আজিজমার্কা নির্বাচন কমিশন তৈরি করেছে, ভোট চুরির রাজনীতি শুরু করেছে। তারা দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইলে পাকিস্তানে চলে যাক। ফ্যাসিবাদ কাকে বলে তার জ্বলন্ত প্রমাণ বিএনপি। বিএনপি ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র করেছিল, শেখ হাসিনা সেটা নির্মূল করেছে।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ এই নেতা বলেন, আদালতের রায় অনুযায়ী তারেক রহমানের বক্তব্য অনলাইনে দেওয়া যাবে না, কিন্তু সেটা অমান্য করে তিনি প্রতিদিন অনলাইনে আন্দোলনের বক্তব্য দিচ্ছে। কেন তার শাস্তি হচ্ছে না?
বাংলাদেশের ওপর পশ্চিমাদের পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, আমরা দাওয়াত করি না, ইউরোপ-আমেরিকার নেতৃবৃন্দ দাওয়াত ছাড়াই চলে আসে। এই বছর ২২টি দেশে নির্বাচন হবে। সে সকল দেশ বাদ দিয়ে ঘুরে ঘুরে ইউরোপ-আমেরিকার নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশে কেন?
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা ভারত মহাসাগরীয় পরিকল্পনা ফাঁস করায় তারা এ দেশে নজর দিয়েছেন। তিনি সত্য কথা বলেন এটাই তার দোষ। শেখ হাসিনা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না। ভিসানীতি দিচ্ছেন নির্বাচনে যারা হস্তক্ষেপ করবে তাদের জন্য। বিএনপি তো চায় নির্বাচন সহিংস করতে, বাধা দিতে তাদের বেলায় তো কোনো ভিসানীতি প্রয়োগ করা হচ্ছে না। আমরা চাই নির্বাচন সুষ্ঠু হোক, নির্বাচনের আগে ও পরে সবসময় শান্তি চাই। আমরাও দেখবো এই নিষেধাজ্ঞা, ভিসানীতি কার ওপর প্রয়োগ করে।
১৫ আগস্টের শহীদদের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, অবুঝ শিশু, অবলা নারী, অন্তঃসত্ত্বা নারীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। কারবালার ময়দানেও এসব দেখা যায়নি। পলাশীর বিশ্বাস ঘাতকতায় সেনাপতি ছিল ইয়ার লতিফ আর ’৭৫ এ জিয়াউর রহমান। পলাশীর ময়দানে যেমন সিরাজ খুব কাছের সেনাপতিদের জন্য পরাজিত হয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধুও নিজের কাছের মানুষ দ্বারাই শহীদ হয়েছিলেন। মোহনলাল যেমন সিরাজের পক্ষে লড়াই করে প্রাণ দিয়েছিলেন, ঠিক তেমনই কর্নেল জামিল বঙ্গবন্ধুকে বাঁচাতে এসে শহীদ হয়েছিলেন।
এ সময় ছাত্রলীগের যেসব ইউনিটে কমিটি নেই, সেখানে দ্রুত কমিটি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন। এতে অন্যদের মধ্যে বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানসহ অন্যান্য নেতারা।