ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠান আগামীকাল বুধবার শুরু হচ্ছে। এ অনুষ্ঠান সামনে রেখে বাঙালি জাতির অন্যতম আলোকবর্তিকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) লাল-নীল আলোর বর্ণিল সাজে সেজেছে। ঢাবি কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে জাঁকজমকভাবে শতবর্ষ পূর্তির অনুষ্ঠান করতে না পারার আক্ষেপ ঘুচাতে আয়োজনের কমতি রাখেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক, টিএসসি, কার্জন হল, উপাচার্য চত্বর, স্মৃতি চিরন্তন, কলা ভবন এবং আবাসিক হলগুলোকে নানা রঙের আলোয় আলোকিত করা হয়েছে। ঢাবি ক্যাম্পাস রীতিমতো উৎসবে পরিণত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আহসান প্রামাণিক বলেন, ঢাবি শতবর্ষ এবং দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। দেখে মনে হচ্ছে-যেন নববধূর সাজে বসে আছে আমার প্রিয় শিক্ষাঙ্গন, প্রিয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঘুরতে আসা ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী ঝুমা নাজমা বেলেন, খুব কম সময় বিশ্ববিদ্যালয়কে এমন বর্ণিল সাজে দেখেছি। নিজের চোখকে সত্যিই বিশ্বাস করতে পারছি না। মনে হয় আবার প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে নিয়মিত ক্লাস শুরু করি।
শতবর্ষ পূর্তির সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে ঢাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল যুগান্তরকে বলেন, শতবর্ষের সুভ্যেনির তৈরি হয়েছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য দেশের সেরা ১০০ শিল্পীকে নির্বাচন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তারাও তাদের পূর্বপ্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। বলতে গেলে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। অনুষ্ঠানের সময়সূচি : ১ ডিসেম্বর ঢাবির শতবর্ষ ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। এতে শুভেচ্ছা বার্তা দেবেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লে শেরিং। সম্মানীয় অতিথি থাকবেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একে আজাদ, ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এদিন বিকাল ৪টায় ঢাবির ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা হবে। এতে সম্মানীয় অতিথি থাকবেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রথম দিনের কর্মসূচি সমাপ্ত হবে।
আয়োজনের দ্বিতীয় দিনে বিকাল ৪টায় ঢাবির ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সাবেক উপাচার্য ড. একে আজাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ডাক-টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান সমাপ্ত হবে। ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠানের তৃতীয় দিন ঢাবির বঙ্গবন্ধুর চেয়ার ও অনারারি অধ্যাপক ড. আতিউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচক হিসাবে উপস্থিত থাকবেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সম্মানীয় অতিথি থাকবেন কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক চন্দ্রিকা এন বিজয়ারত্নে। এদিন সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনের অনুষ্ঠানের সমাপ্ত হবে।
৪ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় ঢাবির সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহাদত আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী। ১২ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় ঢাবির সাবেক উপ-উপাচার্য ড. নাসরীন আহমদের সভাপতিত্বে আলোচক থাকবেন রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী প্রমুখ। ১৬ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আতশবাজি ও লেজার শোর মাধ্যমে ঢাবির শতবর্ষের কর্মসূচির সমাপ্ত হবে।