ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) এর নিলামে বরাবরই দেখা যায় সেরা ক্রিকেটারদের নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর টানাটানি। তবে নিলামে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হন যিনি, তিনি যে সাম্প্রতিক পারফর্ম্যান্সের হিসেবে তুঙ্গে থাকবেন এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এমনকি নিলাম থেকে সব থেকে দামি ক্রিকেটার দলে নিলেই যে দলগুলো সেবারের আসরে চ্যাম্পিয়নের তকমা গায়ে লাগিয়েছে, তার নজিরও নেহাত কম।
আইপিএলের বিগত ১৫টি আসরে শুধুমাত্র ২০১৩ সালে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স সর্বোচ্চ দামে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে কিনে নেওয়ার পর সেবছর শিরোপা জেতে। এরপর আর কোনও আসরে একটি দলও সবচেয়ে বেশি দামে ক্রিকেটার কিনে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি।
আইপিএলের নিলাম ইতিহাসের রেকর্ডবুককে তছনছ করে দিয়ে এবার সর্বোচ্চ দামে বিক্রিত ক্রিকেটারের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন ইংলিশ অলরাউন্ডার স্যাম কারান। এবারের ‘মিনি’ নিলামকে ‘মেগা’ করে রেকর্ড ১৮ কোটি ৫০ লাখ রুপি দিয়ে তাকে কিনে নিয়েছে পাঞ্জাব কিংস। তাই এবার অপেক্ষার পালা। স্যাম কারানকে দলে নেওয়া পাঞ্জাব কিংসকে কি পারবে চ্যাম্পিয়ন হতে? কারান কি পারবে আসন্ন আইপিএলে তার দলকে শিরোপা উপহার দিতে?
একনজরে দেখে নেওয়া যাক, ২০০৮ থেকে ২০২২ সালে মাঠে গড়ানো ১৫টি আসরে সবচেয়ে বেশি দামে ক্রিকেটার কেনা দলগুলোর সার্বিক অবস্থা-
২০০৮
সেবারের আসরে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার ছিলেন চেন্নাই সুপার কিংসের মহেন্দ্র সিং ধোনি। তবে সেবছর রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়ে চেন্নাইকে।
২০০৯
আইপিএলের দ্বিতীয় আসরে যৌথভাবে দামি ক্রিকেটার ছিলেন দুই ইংলিশ তারকা কেভিন পিটারসেন ও অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ। তবে ফ্লিনটফের চেন্নাই সেবার সেমি থেকে বিদায় নেয়। অন্যদিকে পিটারসেনের ব্যাঙ্গালুরু রানার্সআপের স্বাদ পায়।
২০১০
সেবারের আসরে কিউই বোলার শেন বন্ড ও ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার কাইরন পোলার্ড সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার ছিলেন। বন্ডের দল কলকাতা ছয় নম্বরে থেকে আসর শেষ করে। পোলার্ডের মুম্বাই রানার্সআপ হয়।
২০১১
সেবছর গৌতম গম্ভীর দামি ক্রিকেটার ছিলেন। কলকাতা চার নম্বরে আসর শেষ করে।
২০১২
চেন্নাই সুপার কিংসের রবীন্দ্র জাদেজা সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হন। সেবার রানার্সআপ হয় চেন্নাই।
২০১৩
এই বছরই গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে সর্বোচ্চ দামে কিনে চ্যাম্পিয়ন হয় মুম্বাই।
২০১৪
সেবছর সব থেকে দামি ক্রিকেটার ছিলেন যুবরাজ সিং। রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু সেবার ৭ নম্বরে থেকে আইপিএল মিশন শেষ করে।
২০১৫
দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ২০১৫ সালের আইপিএলে সবচেয়ে দাম দিয়ে কিনেছিল যুবরাজ সিংকে। সেবার দিল্লি ৭ নম্বরে অভিযান শেষ করে।
২০১৬
সেবছর সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়াটসন। ব্যাঙ্গালুরু সেবার রানার্সআপ হয়।
২০১৭
সেবারের আসরে সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হন ইংলিশ অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। রাইজিং পুনে সুপার জায়ান্টস ২০১৭ সালে রানার্সআপ হয়।
২০১৮
টানা দুই বছর সর্বোচ্চ দামি ক্রিকেটারের তকমা গায়ে জড়ান স্টোকস। সেবার রাজস্থান রয়্যালস চতুর্থ হয়।
২০১৯
সেবছর বরুণ চক্রবর্তী ও জয়দেব উনাদকাত নিলামে সব থেকে বেশি টাকা পান। তবে পাঞ্জাব কিংস ৬ ও রাজস্থান রয়্যালস ৭ নম্বরে থেকে সেবার আসর শেষ করে।
২০২০
কলকাতা সেবছর অজি বোলার প্যাট কামিন্সকে সবচেয়ে বেশি দামে কিনে নেয়। কেকেআর সেবার পাঁচ নম্বরে আইপিএল মিশন শেষ করে।
২০২১
সেবছর ক্রিস মরিস ছিলেন সর্বোচ্চ দামি ক্রিকেটার। রাজস্থান রয়্যালস সেবার ৭ নম্বরে থাকে।
২০২২
সবশেষ আইপিএলে ইশান কিষাণকে সবচেয়ে বেশি দামে কিনে লিগ টেবিলের তলানিতে থেকে আসর শেষ করে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।