ভারতীয় হাই কমিশনের উদ্যোগে ৫৮তম কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা (আইটেক) দিবস উদ্যাপিত হয়েছে। বৃহস্প্রতিবার সন্ধ্যািয় রাজধানী ঢাকার ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি), আইডিইবি ভবন মিলনায়তনে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সংবর্ধনা ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা। বিশেষ অথিতি হিসেবে বক্তব্য্ রাখেন ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ার্সের (আইডিইবি) সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার একেএমএ হামিদ, ভারতীয় হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার ড.বিনয় জর্জ, প্রথম সচিব রাজেন্দ্র সিং।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ক এক ও অভিন্ন। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ভারত বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশ ভারতের কাছে ঋণি। ভারত বাংলাদেশ উন্নয়নে সব সময় সহযোহিতা করে আসছে। শিক্ষা থেকে শুরু করে, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যর সর্বক্ষেত্রে সহযোগিতা করে আসছে। বিভিন্ন খাতে বৃত্তি প্রদান করছে, প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। দক্ষতা অর্জনে প্রতিবছর শত শত লোকদের উচ্চতর প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। ভারত আমাদের পাশে আছে, সুখে দু:খে সবর্দা পাশে থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও সমৃদ্ধ হবে।
হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা উল্লেখ করেন, ভারতের ঘনিষ্ঠ উন্নয়ন সহযোগীদের একজন হিসেবে বাংলাদেশ আইটেক প্রোগ্রামে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। এই বছর সুবর্ণ জয়ন্তী বৃত্তি উন্মোচনকে তিনি একটি উদাহরণ হিসাবে বর্ণনা করেন, যেখানে বাংলাদেশ প্রতিবছরে আইটেকের জন্য ৫০০টি ডেডিকেটেড স্লট প্রাপ্ত হয়।
এছাড়াও বাংলাদেশ সরকারের প্রয়োজন অনুসারে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বেশ কিছু টেইলর-মেড প্রোগ্রাম আয়োজন করা হয়। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের আইটেক অ্যালামনাইগণ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বের দৃঢ় বন্ধন প্রদর্শন করেছে।
তিনি আরও বলেন, আইটেক ভারত সরকারের একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রোগ্রাম, ভারতের উন্নয়ন সহায়তা কর্মসূচির অংশ হিসাবে ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশে ভারতের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা এবং যথাযথ প্রযুক্তির সুবিধা প্রদান করে আসছে।
প্রতিবছর, অ্যাকাউন্টস, অডিট, সুশাসন অনুশীলন, ব্যবস্থাপনা, এসএমই, গ্রামীণ উন্নয়ন, জনস্বাস্থ্য, সংসদীয় বিষয়, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থাপনা, আইটি, ডেটা অ্যানালিটিক্স, রিমোট সেন্সিং ও রিনিউয়েবল এনার্জির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ কোর্সের জন্য আইটেক অংশীদার দেশগুলোকে প্রথম সারির ভারতীয় ইনস্টিটিউটসমূহে ১০,০০০টিরও বেশি প্রশিক্ষণ স্লট দেওয়া হয়ে থাকে।
আয়োজকরা জানান, আইটেক সহযোগিতার অধীনে বাংলাদেশ অগ্রণী ও সুযোগ্য অংশিদার। এমনকি ২০২০-২১ সালে কোভিড মহামারিও এই উত্সাহ হ্রাস করতে পারেনি, যখন ই-আইটেকের অধীনে ভার্চুয়ালি বেশ কয়েকটি কোর্সের আয়োজন করা হয়েছিল। ৪,৫০০-এরও বেশি তরুণ বাংলাদেশি প্রফেশনালগণ আইটেক প্রোগ্রামের অধীনে ভারতে এই জাতীয় বিশেষায়িত স্বল্প ও মধ্যমেয়াদী কোর্স করেছেন।
এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রতিভাধরদের সাথে সেরা ভারতীয় অনুশীলনগুলো সহভাগিতা করার সুযোগ দেয়। বিশেষ করে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উভয়ক্ষেত্রেই অসাধারণ অগ্রগতি সাধনকারী বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে ভারত সমানভাবে লাভবান হয়েছে।
আইটেক-২০২২ দিবসের অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথিদের পাশাপাশি, নানান ক্ষেত্র থেকে প্রায় ২৫০ জন আইটেক অ্যালামনাই উপস্থিত ছিলেন। বিশিষ্ট অ্যালামনাইদের মাঝে কয়েকজন ভারতে তাদের প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেন। ভারতনাট্যম ও কত্থক নৃত্যের যুগলবন্দীর একটি ছোট সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।