প্রথমাবরের মতো দেশব্যাপী শেখ কামাল আন্তঃস্কুল ও মাদ্রাসা অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন। তাদের এই অনন্য উদ্যোগ বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তার অসুদপায়ের জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে কলঙ্কিত হয়। বিশেষ করে খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মোর্ত্তজা রশিদী দারার ওপর উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে অংশ না নেওয়া খেলোয়াড়কে চূড়ান্ত পর্যায়ে খেলানো, জেলা পর্যায়ে এক ইভেন্টের খেলোয়াড়কে চূড়ান্ত পর্যায়ে আরেক ইভেন্টে এবং এসএসসি পরীক্ষার্থীকে খেলানোসহ ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জঘন্য ব্যবহার করার গুরুতর অভিযোগ ওঠে।
খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদকের ওপর দশটি অভিযোগ চিহ্নিত করে খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থায় চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন। সেই চিঠি আমলে নিয়েছেন খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও বিভাগীয় কমিশনার জিল্লুর রহমান চৌধুরী। ২৬ এপ্রিল খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থায় এই বিষয়ে বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় সাধারণ সম্পাদক এসএম মোর্ত্তজা রশিদী দারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
নিয়ম বহির্ভূতভাবে অনৈতিক উপায়ে ব্যক্তিগত স্বেচ্ছাচারিতায় অ্যাথলেট পরির্বতন, অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির কারণে বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ১৪-এর ১৪.২ ধারা অনুযায়ী কেন দারার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার দফাওয়ারী (১১টি বিষয়ে) জবাব সাত কর্মদিবসের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে। ১৪ মে খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি স্বাক্ষরিত চিঠির অনুলিপিতে রয়েছেন বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সচিব।
শেখ কামাল আন্তঃস্কুল ও মাদ্রাসা অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের আগে শেখ কামাল যুব বাংলাদেশ গেমস অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই গেমসেও খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দারার কার্যক্রম ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। সেই গেমসেও কিছু ডিসিপ্লিনে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বাজে ব্যবহারের পাশাপাশি তার বিভাগের খেলোয়াড়দের বয়স, জেলা ও ডিসিপ্লিন নিয়ে অসঙ্গতি-অভিযোগ ছিল। এসএম মোর্ত্তজা রশিদী দারা খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিশেয়নের নির্বাহী সদস্য। ফেডারেশন ও অলিম্পিকের কর্মকর্তা হয়েও দুটি প্রতিযোগিতাতেই দারার ওপর গুরুতর অভিযোগ। ক্রীড়াঙ্গনে দীর্ঘদিন জড়িয়ে আছেন মোর্ত্তজা রশিদী দারা; জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেই তার মূল পরিচিতি।
জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার ওপর খেলোয়াড় সংক্রান্ত নানা অভিযোগ নতুন কিছু নয়। অনেক বছর থেকে দেশের ক্রীড়াঙ্গন এই অসঙ্গতি বয়ে বেড়াচ্ছে। জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদ (ফোরাম) বিভিন্ন ফেডারেশনের নির্বাচনে নিজেদের পদ-পদবীর অধিকার আদায়ে যতটা সচেষ্ট; খেলায় স্বচ্ছতা ও নিজেদের জবাবদিহিতার ব্যাপারে ততটাই যেন নির্লিপ্ত!
সাম্প্রতিক এসব ঘটনায় পরিষদের কাজ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, ‘একটি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে সর্বোচ্চ উপযোগিতা পেতে হলে, সঠিক নিয়ম কানুন মেনেই সকল সংস্থার অংশগ্রহণ করা উচিত। দুয়েকটি জেলা, বিভাগের বিচ্ছিন্ন কিছু কর্মকাণ্ডে মাঝেমধ্যে প্রশ্ন উঠে। আমাদের সাধারণ পরিষদের সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হলে নির্দেশনা আসতে পারে।’