২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জন নিহত হবার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের জন্য ভারত কাঠগড়ায় তুলেছে পাকিস্তানকে। যদিও পাকিস্তান প্রথম থেকেই দাবি করছে, এই হামলার সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই।
পাশাপাশি হামলায় জড়িত থাকার অকাট্য প্রমাণ চেয়ে ঘটনার ‘নিরপেক্ষ তদন্তেরও’ দাবি জানিয়েছে তারা। পেহেলগামকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় ভারত বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি শক্তি প্রদর্শনও করেছে ভারতীয় বাহিনী। তবে সরাসরি নয়, ভিডিও’র মাধ্যমে।
এর মাঝেই কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে আবারো টানা পঞ্চম দিনের মতো গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। জম্মু-কাশ্মীরজুড়ে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে ভারতের সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনী। নিরাপত্তার আশঙ্কায় অর্ধেকের বেশি পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ সোমবার দাবি করেছেন, জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের উপর ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানে ভারতের সামরিক অনুপ্রবেশ আসন্ন।
ইসলামাবাদে তার কার্যালয় থেকে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসিফ বলেন, আমরা আমাদের বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করেছি; কারণ এমন একটা কিছু হতে পারে যে কোনও সময়। সেই পরিস্থিতিতে কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেগুলো নেওয়া হয়েছে।
আসিফ জানান, ভারতের মনোভাব ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ভারতীয় হামলার সম্ভাবনা সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করেছে। তবে, তিনি কেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর অনুপ্রবেশ আসন্ন বলে মনে করছেন তার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ভারত যেকোনো আগ্রাসী পদক্ষেপ নিলে তার জবাব দিতে প্রস্তুত আছে তার দেশ। পাকিস্তান সর্বোচ্চ সতর্ক অবলম্বন করছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, অস্তিত্বের জন্য সরাসরি হুমকি থাকলেই তারা তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের ভাণ্ডার ব্যবহার করবে।
এদিকে, সিন্ধু পানিচুক্তির অধীনে পাকিস্তানের প্রাপ্য পানি সুরক্ষায় দেশটি প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন, পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার । তিনি বলেন, সিন্ধু পানিচুক্তি শুধু ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের বিষয় নয়, এটি গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই চুক্তির মর্যাদা রক্ষা করা দরকার। পাকিস্তান চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন ও দেশের পানির অধিকার সুরক্ষায় সচেষ্ট থাকবে।
ভারতের সাথে উত্তেজনা নয়, শান্তির পথে এগোতে চান সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। ভারতের সঙ্গে শান্তি ফেরাতে সব ধরনের কূটনৈতিক মাধ্যম ব্যবহারে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।