অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলজুড়ে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। দেশটির নাগরিকরা বলছেন, গত অর্ধ-শতাব্দির মধ্যে এমন ভয়ানক বন্যা কখনই দেখেননি তারা। বন্যায় জনজীবনে নেমে আসা বিপর্যয় ঠেকাতে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ জারি করেছে দেশটির সরকার।
নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রধানমন্ত্রী গ্ল্যাডিস বেরেজিকলায়ান বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার ৮০ লাখ মানুষের সর্বাধিক জনবহুল এই রাজ্যে প্রাথমিক ধারণার চেয়ে প্রবল বর্ষণ হয়েছে। বিশেষ করে সিডনির উত্তর-পশ্চিমের নিচু এলাকায় প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে।
টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, গতকাল আমরা আশা করেছিলাম, এটি গত ২০ বছরের মধ্যে অন্যতম এক বন্যা। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে গত ৫০ বছরের মধ্যে এ ধরনের বন্যা এবারই প্রথম।
দ্রুতবেগে ধেয়ে আসা বন্যার পানির তোড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সিডনির উত্তরপশ্চিমে। মাঝ রাতে সেখানকার হাজার হাজার মানুষকে বাড়ি-ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রোববার ভোরের দিকে ওই এলাকার এক হাজার বাসিন্দাকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
টেলিভিশন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তীব্রগতিতে ধেয়ে আসা পানির স্রোতে বাড়ি-ঘর, রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, গাছপালা উপড়ে পড়ছে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রধান প্রধান সড়কগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগামী সোমবার পর্যন্ত এই রাজ্যের অনেক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি-ঘর মেরামতের জন্য আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে গত কয়েকদিন ধরে প্রবল বর্ষণ হচ্ছে। দেশটির আবহাওয়া ব্যুরো সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, রোববারও ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের শঙ্কা রয়েছে।
নিউ ক্যাসেলের উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দা গ্রেগ কক্স ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, এটা ধ্বংসাত্মক। আমাদের বাড়ির পুরো এলাকা পানির নিচে। আমি এ ধরনের বন্যা কখনই দেখি নাই। আমি আজ বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনিও অতীতে এ ধরনের বন্যা কখনই দেখেননি বলে জানিয়েছেন।